সিবিএন ডেস্ক:
দানিশ সিদ্দিকি পুলিৎজার পুরস্কারজয়ী সাংবাদিক। বড় বড় যুদ্ধ দেখেছেন খুব কাছ থেকে। কিন্তু করোনার বিরুদ্ধে ভারতের চলমান যুদ্ধের সমতুল্য কিছু কোনোদিন দেখেননি তিনি।

হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে
দিল্লির লোকনায়ক জয় প্রকাশ হাসপাতালে করোনা রোগীদের মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চলছে। প্রতিদিন এমন লড়াই দেখেন আর ছবি তোলেন দানিশ সিদ্দিকি।

এমন আগুন দেখতে কে চায়
চিতায় পুড়ছে করোনায় মারা যাওয়া অনেকের দেহ। মৃত্যু অনেক দেখেছেন সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি। কিন্তু নিজের দেশে প্রতিদিন মৃত্যুর এমন মিছিল দেখতে হবে কোনোদিন ভাবেননি।

করোনার কবর
দিল্লির কবরস্থানে চিরশায়িত হচ্ছেন করোনার কাছে হার মানা রোগীরা। সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি যতটা সম্ভব এড়িয়ে মরদেহ দাফনের কাজ দ্রুত শেষ করছেন স্বজনরা। খুব কাছ থেকে এমন দৃশ্য ক্যামেরায় ধরেছেন দানিশ। এখন এমন ছবি প্রতিদিন তুলতে হয় তাকে।

পরিস্থিতির ভয়াবহতায় অসহায় মানুষ
গত শুক্রবার দিল্লির গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালে যেতেই রিকশা ভ্যানে শোয়া এক রোগীর দিকে দৃষ্টি যায় দানিশের। রোগীর নাম শ্যাম নারায়ণ। বয়স ৪৫। পরিবারের সদস্যরা জানান, খুব শ্বাসকষ্ট হওয়ায় ভোর ছয়টায় একবার আনা হয়েছিল তাকে। কিন্তু শ্যাম নারায়ণকে বেশ সুস্থ মনে হওয়ায় বাড়ি ফিরিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বিকালে বাধ্য হয়ে আবার হাসপাতালে আনতে হয়। চিকিৎসা শুরুর আগেই মারা যান শ্যাম নারায়ণ।

দায়িত্বে অবহেলা?
স্বজনেরা ভীষণ ক্ষুব্ধ। তারা মনে করেন, সকালে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে না দিলে শ্যাম নারায়ণকে বাঁচানো যেত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মনে করে, সব মুমূর্ষুকেও যেখানে বেড দেয়া যাচ্ছে না, তখন দৃশ্যত সুস্থ মনে হওয়া কাউকে ফিরিয়ে দেয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এই আত্মপক্ষ সমর্থন শ্যাম নারায়ণের পরিবারকে ন্যূনতম সান্ত্বনাও দিতে পারেনি। শোক সন্তপ্তরা দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে চিকিৎসকদের শাস্তি চান।

অন্যরকম যুদ্ধ
ইরাক যুদ্ধ আর আফগানিস্তান যুদ্ধ কাভার করা দানিশ সিদ্দিকি মনে করেন, ভারতেও এখন এক ধরনের যুদ্ধাবস্থাই চলছে। ২০১৮ সালে রয়টার্সের হয়ে পুলিৎজার পুরস্কার জেতা সাংবাদিকদের অন্যতম সদস্যের মতে ভারতের এই যুদ্ধ আরও কঠিন। কারণ, ‘এই যুদ্ধে প্রতিপক্ষ কে তাতো আপনি জানেন না। প্রতিপক্ষকে চেনেন না, তাকে দেখতেও পাচ্ছেন না আপনি!’

সূত্র: ডয়চে ভেলে