দৈনিক যুগান্তরে ‘অল্পদিনে যেভাবে অর্ধশত কোটি টাকার মালিক যুবলীগ নেতা’, স্থানীয় দৈনিক ইনানীতে ‘অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহে বাধা আদরের-সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি’ ও ‘যুবলীগ নেতা ও এমপির পিএস পরিচয়ে অল্পদিনে কোটি টাকার মালিক আদর!’, চকরিয়ায় আদরের একি অমানবিক কান্ড! জাগরণে- ‘অল্পদিনেই কয়েক কোটি টাকার মালিক যুবলীগ নেতা- সাংবাদিকদের প্রাণনাশের হুমকি, থানায় জিডি’, দৈনিক কক্সবাজারে-‘চকরিয়ার আদর আঙুল ফুলে কলাগাছ’, শিরোনামসহ আরো বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা কোন অবস্থাতেই সত্য নয়।
প্রকাশিত এসব মিথ্যা সংবাদ সিন্ডিকেট সাংবাদিকতার অংশ। প্রকাশিত এসব সংবাদে বস্তুনিষ্টতা, নিরপেক্ষতার কোন ধরণের লেশমাত্র নেই। প্রকাশিত সংবাদগুলো একেবারেই মিথ্যা, ভিত্তিহীন, অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়, অযোক্তিক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ষড়যন্ত্রমূলক ও অবিবেচনাপ্রসূত। সর্বোপরী এসব সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে তোয়াক্কাই করা হয়নি সাংবাদিকতার নীতিমালা। তাই প্রকাশিত এসব সংবাদ নিয়ে কাউকে বিভ্রান্ত করার বা হওয়ার অবকাশ নেই।
এবার আসি মূল বক্তব্যে। সম্প্রতি একটি বালু মহালের ইজারায় বা নিলামে অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী আমার উপর প্রচণ্ড ুব্ধ হোন। সেই ইজারায় অংশ নেওয়া আমিসহ আমাদের কয়েকজনের কাছে নিলাম প্রক্রিয়ায় হেরে যান। যার কারণে তিনি ভাড়াটে কিছু কথিত ফেসবুক সাংবাদিককে লেলিয়ে দিয়েছেন আমার বিরুদ্ধে। তাদেরকে টাকা দিয়ে এসব সংবাদ প্রকাশ করার ক্ষেত্রে মূখ্য ভূমিকাও পালন করছেন উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদী।
প্রকাশিত সংবাদগুলোতে আমাকে কক্সবাজার-১ আসনের মাননীয় এমপি আলহাজ জাফর আলমের পিএস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যা বাস্তবে সত্য নয়। অবশ্য এমপি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার আগে চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করি আমি। পরবর্তীতে আমি স্থানীয় রাজনীতি ও ঠিকাদারীতে যুক্ত হয়ে যাই। এরইমধ্যে জাফর আলম এমপি নির্বাচিত হলে তাঁর পিএস নিযুক্ত হোন আমিন চৌধুরী। অতএব আমাকে এমপির পিএস উল্লেখ করার পেছনে কথিত সাংবাদিকদের দুরভিসন্ধী এবং ষড়যন্ত্রের গন্ধ রয়েছে।
আমি এসএসসির পাস করার পর থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হই। আমি রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই সুইডিশ-এ পড়ার সময়ও ছাত্রলীগের রাজনীতি করি। সেখানে বর্তমান তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব ড. হাছান মাহমুদের সান্নিধ্যে থেকে রাজনীতি করেছি। সুইডিশ-এ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করে নিজ এলাকায় এসে আবারও ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত হই এবং ডুলাহাজারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করার কাজে নেমে পড়ি। তৎকালীন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হই, তবে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের অনুরোধে আমি ডুলাহাজারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করি। এর পর আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হই। বর্তমানেও ডুলাহাজারা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক এবং উপজেলা যুবলীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।
প্রথমত- চকরিয়ায় স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন প্রতিহত করতে ইতোপূর্বে যারা মাঠে ছিলেন, আমি তাদেরই একজন। একজন রাজপথের কর্মী। এখন যারা আমাকে অনুপ্রবেশকারী বলছে, ঐ সময়টাতে রাজপথে তাদের আবদান কি ছিল তা চকরিয়াবাসীর জানা রয়েছে।
দ্বিতীয়ত-আমি একজন প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার। নিয়মিত আয়কর প্রদানকারী ব্যবসায়ী। গত ১২ বছরে পুরো দেশের মানুষেরই অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। আমিও ঠিকাদারী ব্যবসা করে বৈধ উপায়ে উপার্জন করছি। কঠোর পরিশ্রম করেছি এবং বর্তমানেও করে যাচ্ছি। একজন ঠিকাদারের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি (কয়েক লাখ টাকার সম্পদ) কি খুব অস্বাভাবিক?
তৃতীয়ত-আমি ওপেন চ্যালেঞ্জ করছি, যেসব পত্রিকায় আমাকে অর্ধশত কোটি টাকা বা সম্পদের মালিক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রয়োজনে আমি, আমার স্ত্রী বা পরিবারের কারো নামে ৩০ লাখ টাকার সম্পদ বা টাকা থাকে তার সঠিক তথ্য অনুসন্ধান করা যেতে পারে। এখানে প্রয়োজনে দুর্নীতি দমন কমিশনও তদন্ত করতে পারে। একইভাবে আমার ব্যক্তিগত কোন উচ্চাভিলাস নেই এবং কোন গাড়ির মালিকও আমি নই। তবে হ্যাঁ যৌথ ঠিকাদারী ব্যবসার ও কাজে যাওয়া-আসার সুবিধার্থে আমি কিছুদিন ধরে একটি গাড়ি ব্যবহার করি। সেই গাড়িটির মালিক হচ্ছেন উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ঠিকাদার জনাব আবদুল হাকিম। যা সকলেরই জানা।
চতুর্থত- আমি আগামী ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কাজ করছি। আমি কয়েকবছর ধরে এলাকায় মানুষের দোরগোড়ায় গিয়ে তাদের সুখে-দুঃখের অংশীদারও হয়েছি, বর্তমানেও হচ্ছি। এতে এলাকায় আমার বিপুল জনপ্রিয়তা লক্ষ করছেন উপজেলার রাজনীতি সচেতন মানুষ। এসব কারণে এলাকায় এবং আওয়ামী রাজনীতির মধ্যে আমার একটি শক্ত প্রতিপ তৈরী হয়েছে। এমনকি বর্তমান মাননীয় এমপির সার্বিক সহযোগীতায় এবং অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমি যুগ যুগ ধরে অবহেলিত ও পশ্চাদপদ ডুলাহাজারা ইউনিয়নে একের পর এক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসতেছি। দীর্ঘ একযুগ ধরে সরকার দলের কোন জনপ্রতিনিধি ডুলাহাজারা ইউনিয়নে নির্বাচিত না হওয়ায় উন্নয়ন বঞ্চিত ছিল বৃহত্তর ডুলাহাজারা ইউনিয়ন। এক্ষেত্রে বর্তমান মাননীয় এমপি চকরিয়া-পেকুয়াবাসীর অভিভাবক জনাব আলহাজ জাফর আলম মহোদয়ের সুদৃষ্টি থাকায় ডুলাহাজারা ইউনিয়ন উন্নয়নের দিক দিয়ে অনেকগুন এগিয়ে গেছে। যা বর্তমান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা খন্দকার মোস্তাকের অনুসারীদের তা কোনভাবেই সহ্য হচ্ছেনা। তাছাড়া জনসেবা করতে গেলে অন্যদের বেলায় যেসব প্রতিবন্ধতা তৈরি হয়েছে, তা আমার ক্ষেত্রেও তৈরি হওয়াটা একেবারেই স্বাভাবিক বিষয়। তাই এসব অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রে আমি বিন্দুমাত্র বিচলিত নই।
পঞ্চমত- আমাকে ঘায়েল করতে গিয়ে আমার প্রিয় সহধর্মীনিকেও জনসম্মুখে হেয়-প্রতিপন্ন করতে ছাড়েনি কথিত চাঁদাবাজ সাংবাদিকেরা। এতে আমার স্ত্রীর যথেষ্ট মানহানি
হওয়াসহ সমাজের মানুষের কাছে হাসির পাত্র হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে আমার স্ত্রীকে। এক্ষেত্রে আমি এবং আমার স্ত্রী যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনি প্রতিকার চাইতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টপত্র সংগ্রহ করাসহ যথাযথ প্রস্তুতি নিচ্ছি।
পরিশেষে উদ্ভট অভিযোগ উত্থাপন করে কিছু কথিত সাংবাদিক ও ফেসবুক সাংবাদিক সম্প্রতি আমার কাছ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। এনিয়ে মোবাইল ফোনে তাদের সাথে বাগবিতণ্ডা হলেও কাউকে হত্যার হুমকি দেওয়ার তথ্যটি একেবারেই মিথ্যা। যদি আমি হুমকি দিয়ে থাকি, তাহলে সেসব সাংবাদিককে চ্যালেঞ্জ করছি, তাদের কাছে সংরক্ষিত থাকা কল রেকর্ডটি জনস্মুখে প্রকাশ করতে। এছাড়া তাদের অনৈতিক আবদার না রাখায় বালু মহালের বিরোধকে পূঁজি করে উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী কথিত সাংবাদিকদের অর্থের যোগান দেওয়াসহ সব মিলিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।
আমার বিরুদ্ধে কয়েকজন সাংবাদিকের সিরিজ ফেসবুক স্ট্যাটাস, আমার পারিবারিক জীবন নিয়ে কুৎসা রটনায় এই ষড়যন্ত্র অনেক আগেই সকলের কাছে স্পষ্ট হয়েছে। একটি পত্রিকায় লিখেছে, আমার অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদ আছে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, যদি ঐ সাংবাদিক তার অভিযোগ প্রমাণ করতে পারে আমি রাজনীতি ছেড়ে দিবো। আমার এক কোটি টাকার সম্পদও নাই। আমার বাবা সাধারণ একজন শ্রমজীবী মানুষ। তিনি (বাবা) এবং আমার ভাই কখনো বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না। কিন্তু তাদেরকে বিএনপি বানানোর জন্য বিএনপি দলীয় প্যাড ছাপিয়ে এবং সীল-স্বাক্ষর জাল করে অপপ্রচারও করা হচ্ছে। আমি ছোটবেলা থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করেছি এবং আজীবন করে যাবো।
প্রতিবাদকারী
ইঞ্জিনিয়ার মো. হাসানুল ইসলাম আদর
বিশিষ্ট ঠিকাদার ও যুবলীগ নেতা
ডুলাহাজারা, চকরিয়া, কক্সবাজার।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।