আবুল কালাম, চট্টগ্রাম:
রাশিয়ার সঙ্গে টিকা উৎপাদনের চুক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশাল কূটনৈতিক সাফল্য বলে মত প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় রাশিয়ার অনারারি কনসাল স্থপতি আশিক ইমরানের সাথে প্রেসক্লাবস্থ তার দফতরে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে তিনি উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

এ সময় সুজন বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের অন্যতম মিত্রশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হন রাশিয়া। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যখন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় বিনা উস্কানিতে পাখির মতো মানুষ হত্যা করতে শুরু করে ঠিক তখনই বাংলাদেশের জনগনের পক্ষে জাতিসংঘে অবস্থান নেন রাশিয়া। এছাড়া স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রধান সহায়তাকারী দেশ ভারতের সাথে সামরিক চুক্তি করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় রাশিয়া। আর বাংলাদেশের পক্ষে রাশিয়া ছিল বলেই পাকিস্তানের পক্ষে বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌ-বহর পাঠানোর সাহস পায়নি যুক্তরাষ্ট্র। তাছাড়া যুদ্ধের পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাইন ও ধ্বংসাবশেষ অপসারণে রাশিয়ার সামরিক বিশেষজ্ঞরা ব্যাপক অবদান রাখেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুর্নগঠনের কাজ শুরু করেন তখন বঙ্গবন্ধুকে অকুন্ঠ সমর্থন দেন তৎকালীন রাশিয়া সরকার। আজ বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন করোনাভাইরাসের মতো অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে তখনও বাংলাদেশের পাশে এসে দাড়িয়েছে রাশিয়া। ইতিমধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের জন্য চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ। এর ফলে করোনাভাইরাসের টিকা পেতে বাংলাদেশকে আর কারো মুখাপেক্ষী হতে হবে না। বাংলাদেশের জনগন সহজেই দেশে উৎপাদিত টিকা গ্রহণ করতে পারবে। এতে করে বাংলাদেশ দ্রুততম সময়ে করোনার সংক্রমণ এড়াতে পারবে। চট্টগ্রামের জনগনের পক্ষ থেকে তাই রাশিয়ার সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানান সুজন।

এর আগে সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সস্ত্রীক করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ডোজ নেন সুজন। তিনি দেশব্যাপী পরিচালিত টিকা কার্যক্রমের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন দেশের মানুষের জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় সকল জনগনের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিনামূল্যে কোভিডের টিকা প্রদান করছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। তিনি জনগনকে মাস্ক পরিধান করার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে বলেন আমরা সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি তাহলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জীবন ও জীবিকাকে সমন্বয় রেখে বাংলাদেশকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবো। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর এবং চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, প্রফেসর তাহমিনা বেগম, মঈনুল আলম জয় প্রমূখ।