বিবিসি বাংলা:
করোনাভাইরাস সংক্রমণ সংক্রান্ত নেগেটিভ সনদ নিয়েও দক্ষিণ কোরিয়ার সোলে পৌঁছার পর কিছু যাত্রীর টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ আসার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশিদের ওপর নতুন করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
ঠিক কতজন যাত্রীর সেখানে পৌঁছার পর কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ না করলেও বাংলাদেশে দূতাবাসের একটি সূত্র জানিয়েছে যে ১লা এপ্রিল থেকে গতকাল পর্যন্ত মোট ১৬ জন যাত্রী সেখানে গিয়ে টেস্ট করে কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট পেয়েছেন।
এর আগে মার্চ মাসেও অন্তত ১৭ জন যাত্রী করোনাভাইরাসের নেগেটিভ সনদ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে যাত্রা শুরুর পর সোলে গিয়ে টেস্টে পজিটিভ হয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় আগত যাত্রীদের মধ্যে কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্তের হার বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
“১৬ই এপ্রিল থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে”।
বাংলাদেশিদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রেক্ষাপটে সোলে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মকিমা বেগমের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল করোনাভাইরাস টেস্টে পজিটিভ হওয়া যাত্রীদের সংখ্যা এবং এরা যথাযথ সনদ নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন কি-না, সে সম্পর্কে।
জবাবে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “এবারের সংখ্যাটা কতজন সেটি বলা হয়নি এবং এর মধ্যে সবাই হয়তো বাংলাদেশিও নয়। কিন্তু বাংলাদেশ থেকেই তারা গেছে। হয়তো এয়ারক্রাফট বা কোন বিমানবন্দরে ট্রানজিটে থাকার সময় তারা সংক্রমিত হয়েছেন।
“কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া কর্তৃপক্ষ সেটিকে ‘ইমপোর্ট কেস ফ্রম বাংলাদেশ’ হিসেবে বিবেচনা করেছে”।
এর আগে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত বছরের জুনে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও বিমান চলাচল বন্ধ করেছিলো দক্ষিণ কোরিয়া, যা প্রায় আট মাস বহাল ছিলো।
পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দেশটির কর্তৃপক্ষ এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকায় দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা আবেদন গ্রহণ শুরু হয়।
সরকারি হিসেবে, দক্ষিণ কোরিয়ায় বর্তমানে প্রায় ১৯ হাজার বাংলাদেশি আছেন এবং এদের মধ্যে অন্তত ১২ হাজার আছেন শ্রমিক হিসেবে এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম বা ইপিএসের আওতায়।
এছাড়া, প্রায় এক হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন।
তবে আগেই যারা ভিসা নিয়েছেন, তাদের সেখানে যাওয়ার বিষয়ে দেশটির সরকারি ঘোষণায় কিছু বলা হয়নি।
এর আগে ইতালিতেও একই পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ থেকে যাত্রী যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ঘটনা ঘটেছিলো।
গত বছরের জুলাইতে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া যাত্রীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক করোনাভাইরাস সংক্রমিত ব্যক্তি পাওয়ায় বাংলাদেশ থেকে সব ফ্লাইট এক সপ্তাহের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল ইতালি।
এমনকি ওই সময়ে রোমের কাছে ইতালির লাৎজিও অঞ্চলে ঢাকা থেকে যাওয়া সব বাংলাদেশিদের করোনাভাইরাস টেস্ট করানোর জন্য বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছিল।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।