আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

আশ্রয়প্রার্থী এক হাজার ২০০ জন মিয়ানমারের নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া। এর অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহে এই আশ্রয়প্রার্থীদের ১০০ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে দেশটি।

তবে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের আশঙ্কা মিয়ানমারে এই আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানো হলে তাদের জীবন শঙ্কায় পড়তে পারে। মালয়েশিয়া শরণার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি না দিলেও অন্যান্য নথিবিহীন অভিবাসীদের পাশাপাশি শরণার্থীদেরও আটক করে। রোহিঙ্গা মুসলিম এবং শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত না পাঠাতে মালয়েশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর।

এর আগে, গত সপ্তাহে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটি এক হাজার ২০০ জন মিয়ানমারের নাগরিককে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়। এতে বলা হয়, মিয়ানমারের সামরিকবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেওয়ায় ওই আশ্রয়প্রার্থীদের মালয়েশিয়া ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শরণার্থীদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও ইউএনএইচসিআর মালয়েশিয়ায় এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্দি ওই আশ্রয়প্রার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি পায়নি।

মিয়ানমারের চিন এবং সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলেছেন, বন্দি আশ্রয়প্রার্থী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নৌবাহিনীর জাহাজে করে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।

রোহিঙ্গা অধিকারবিষয়ক সংস্থা মিয়ানমার মুসলিম রিফিউজি কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতা ও নারী চেয়ারম্যান থু জার মং বলেছেন, তারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান না। বন্দি ৮৫ মুসলিমের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। তাদের ফেরত পাঠানো হবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এমনকি মালয়েশিয়া থেকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর সময়ও তাদের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে এবং এটি বিপজ্জনক। তার চেয়েও বেশি বিপজ্জনক কিছু ঘটতে পারে।

মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাত-সংকট ও নিপীড়নের ঘটনায় এই উভয় সম্প্রদায়ের সদস্যরা প্রায়ই সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ায় পালিয়ে যায়।

মিয়ানমারের চিন সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের সংগঠন অ্যালায়েন্স অব চিন রিফিউজির নেতা জেমস বাউই থ্যাং বিক বলেছেন, তার সংগঠনের নেতারাও নয়জন আশ্রয়প্রার্থীর ফোন পেয়েছেন; যাদের ফেরত পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে।

মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মিয়ানমারে ফেরতের অপেক্ষায় থাকা নাগরিকদের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করতে ইউএনএইচসিআরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।