চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :

কখনো সচিব, কখনো বিসিএস ক্যাডার আবার কখনো নৌ বাহিনীর কমান্ডার। করতো সরকারি সব বড় বড় পদ ও কর্মকর্তাদের পরিচয়ের ব্যবহার। জালিয়াতি করেন সাক্ষর, সিল ও ভিজিটিং কার্ড। এসব করেই অভিনব প্রতারণ ফাঁদ পাততো মোজাম্মেল হক। হাতিয়ে নিতো লক্ষ লক্ষ টাকা।

রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট থানার কামাল গেট থেকে মোজাম্মেল হক নামে ও প্রতারককে আটক করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

প্রতারক মো. মোজাম্মেল হকের বাড়ি চট্টগ্রামের কর্ণফুলি থানার ৩নং ওয়ার্ডের চরলক্ষ্যায়। তিন সন্তানের জননী মর্জিনা আক্তার পড়েন ওই প্রতারক মোজাম্মেরের ফাঁদে। মৃত স্বামীর মোবাইলে ফোন করে বন্ধু বলে পরিচয় দেন মোজাম্মেল। দাবি করে ২৫তম বিসিএস ক্যাডার। মর্জিনা তাকে বিশ্বাস করেন। বড় পদে থাকায় চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে তার ছেলে ভর্তি করানোর কথা জানান।

মোজাম্মেলও বলেন, কোনো ব্যাপার না। কয়েকদিন পর জেলা প্রশাসনের সিল ও স্বাক্ষর যুক্ত আবেদন এনে দেন মর্জিনাকে।

গত ২২ জানুয়ারি নেন ১৬ হাজার টাকা। আবেদন নিয়ে ছেলেকে ভর্তি করাতে গেলে স্কুলের শিক্ষক বলেন তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। জেলা প্রশাসনে কার্যালয়ে দেখা করতে বলেন। জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে আবেদনের সুপারিশটি যাচাই বাছাই করতে গেলে জানতে পার তা নকল ও ভুয়া।

পরিস্কার হয় মোজাম্মেলের প্রতারণার বিষয়টি। পরে তিনি কোতোয়ালি থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর করেন মামলা।

কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন জানান, প্রতারক মোজাম্মেল হক সচিবের ভিজিটিং কার্ড এডিট করে সচিবের নাম পদবী ঠিক রাখতো। তবে কার্ডের নিচে থাকা সচিবের মোবাইল নম্বর এবং ইমেইল আইডি মুছে ফেলে দিতো। নিজের মোবাইল নম্বর এবং ইমেইল আইডি প্রতিস্থাপন করতো। নিজেকে উপ-সচিব হিসেবে পরিচয় দিতেন। ভিজিটিং কার্ডটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করতেন।

তিনি আরও জানান, নৌবাহিনীর কমান্ডার পরিচয় দিয়ে নৌ বাহিনীতে চাকরি প্রদানের নামে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়েছে অনেকের কাছ থেকে। বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মালামাল ক্রয় করে পরবর্তীতে টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করে। এমন কোনো প্রতারণা নেই যা সে করতো না।