বার্তা পরিবেশক:
মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক কালাগাজির পাড়া এলাকায় নিজের ক্রয়কৃত জমি রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ড এবং থানার ওসি আকুতি জানিয়েছেন সাহাব মিয়া নামে এক বয়োবৃদ্ধ। ভুয়া দলিল ও ভুয়া খতিয়ান সৃজন করে রাহমত আলী নামের এক ব্যক্তি এই বৃদ্ধের মূল্যবান জবর দখল করে রেখেছে অভিযোগ করেছেন তিনি। আদালতে মামলা ও ১৪৪ জারির পরও তিনি কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। ভুক্তভোগী এই বৃদ্ধ কালাগাজির পাড়া এলাকার মৃত মকবুল আহমদের পুত্র।

বৃদ্ধ সাহাব মিয়া জানান, ১৯৯২ সালের ৩ ডিসেম্বর দলিলমুলে উগেন্দ্র ধুপীর কাছ থেকে ২০ কড়া জমি ক্রয় করেছিলেন সাহাব মিয়া। কেনার পর তিনি এই জমি ভোগ দখলে ছিলেন। একই ভাবে উগেন্দ্র ধুপীর কাছ থেকে একই এলাকার রাহমত আলী ক্রয় করেন ২০ কড়া এবং আবুল ফজল ক্রয় করেন ৮ কড়া। এসব জমির অধিকাংশই কালাগাজিরপাড়া বাজারে। এতে উগেন্দ্র ধুপীর সব জমি ক্রয় হয়ে যায়। কিন্তু আর জমি না থাকলেও জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া দলিল সৃজন করে উগেন্দ্র ধুপীর সন্তানদের কাছ থেকে আরো ২৪ কড়া জমি ক্রয় করেন রাহমত আলী। পরে তিনি নিজের নামে ভুয়া নামজারি খতিয়ান সৃজন করেন। এসব ভুয়া কাগজ দেখিয়ে জোর করে সাহাব মিয়ার ৫ কড়া জমি দখল করে নেয় রাহমত আলী। অসহায় হওয়ায় দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও এই জমি উদ্ধার করতে পারেননি বৃদ্ধ সাহাব মিয়া। নিরুপায় হয়ে জমি উদ্ধারে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর কক্সবাজারের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন সাহাব মিয়া। এই মামলার প্রেক্ষিতে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাহমত আলীর বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা জারি করেন এবং অধিকতর তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য এসিল্যান্ডকে নির্দেশ দেন।

বৃদ্ধ সাহাব মিয়া অভিযোগ করেন, উপজেলা ভূমি অফিস থেকে তদন্তের জন্য হোয়ানক ইউনিয়ন তহসিলদার গিয়াস উদ্দীনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু তহসিলদার গিয়াস উদ্দীন মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে দায়সারাভাবে তদন্ত করে রাহমত আলীর পক্ষে প্রতিবেদন দেন।

বৃদ্ধ সাহাব মিয়া বলেন, তহসিলদার গিয়াস উদ্দীন সরেজমিন গেলেও তদন্তের কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি। নেয়া হয়নি সাহাব মিয়াসহ অন্য অংশী ক্রেতাদের কারো বক্তব্য এবং দেখেননি বৃদ্ধ সাহাব মিয়ার কাগজপত্র। রাহমত আলীর সাথে যোগসাজস করে উৎকোচ নিয়ে তার পক্ষে বানোয়াট প্রতিবেদন জমা করেন।

জানা গেছে, সাহাব মিয়া এক অসহায় ব্যক্তি। তার পরিপক্ক দুই সন্তানের একজন সন্ত্রাসীদের হাতে এবং আরেকজন ক্যান্সারে আক্রান্ত মারা গেছে। সে কারণে শারীরিক ও আর্থিকভাবে তিনি চরম দুরাবস্থায় রয়েছেন। অতিকষ্টে নানা যন্ত্রণায় তিনি দিনাতিপাত করছেন। বর্তমানে তার একমাত্র সম্ভল এই সামান্য জমিটুকু। তাই তার জমিটুকু উদ্ধার করে দেয়ার জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ড এবং থানার ওসির কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন।