আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলায় মাসব্যাপী লড়াই করে বিরল জয় পেয়েছেন দেশটির রাখাইন রাজ্যের নারী থেইন নু। খবর আল জাজিরার।

মামলার রায়ে তিনজন ধর্ষককে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। থেইন আশা করেন, এই রায় ধর্ষণের শিকার অন্য নারীদের সাহস নিয়ে মুখ খুলতে অনুপ্রেরণা যোগাবে এবং সেনাবাহিনীর অপরাধ করে শাস্তি এড়িয়ে যাওয়াকে চ্যালেঞ্জ করবে।

৩৬ বছর বয়সী থিয়েন নু চারজন সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছিলেন। মিয়ানমারে বিবাদমান অঞ্চলগুলোতে ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অনেক দিন থেকেই আছে।

থেইনকে এ বছরের জুনে উত্তর রাখাইন অঞ্চলে ধর্ষণ করা হয়েছিল। প্রায় দুই বছর ধরে রাখাইনের আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যুদ্ধ চলছে। রাখাইনের আদিবাসীদের স্বাধীনতা দাবি করে আসছে আরাকান আর্মি।

পরিচয় গোপন রাখতে ছদ্মনাম ব্যবহার করা থেইন নু এএফপিকে বলেন, ‘আমার মতো অনেক নারী এরকম অভিজ্ঞতা সহ্য করেছে। আমি যদি এটা প্রকাশ না করতাম, তাহলে আরও অনেক নারীর একই পরিণতি হতো।’

প্রথম দিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে থেইনের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। থেইনের এই অভিযোগ বানোয়াট বলে দাবি করে তারা।

তবে শনিবার নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে বক্তব্য দিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী যা দেশটির ইতিহাসে বিরল এক ঘটনা। রায়ের ঘোষণায় তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ধর্ষণের দায়ে তিনজনকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। নিজেদের করা তদন্তকে ‘স্বচ্ছ’ বলেও দাবি করে সেনাবাহিনী।

গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন থেইন। থাইল্যান্ডে কর্মরত থেইনের স্বামী তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন এবং টাকা পাঠানোও বন্ধ করে দিয়েছেন।

এই রায়ের পর সেনাবাহিনী কর্তৃক ধর্ষণের শিকার আরও নারীরা এখন সামনে আসা শুরু করেছেন। আরকান উইমেন নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান নইয়ো আয়ে বলেন, ‘দেশ জুড়ে আদিবাসী অঞ্চলগুলোতে ঘটা এই ধরণের অপরাধের মামলার ব্যাপারে আমরা এখন আশাবাদী হচ্ছি।’