আলমগীর মানিক, রাঙামাটি:
রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলায় ভাসান্যাদম ইউনিয়নে ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (এডিপি) ও এলজিএসপি ২/৩ এর আওতায় বরাদ্ধকৃত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন না করে অর্থ উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলীর বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে এর সত্যতাও পাওয়া গেছে।
আত্মসাৎকৃত প্রকল্পগুলোর মধ্যে হল ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে এলজিএসপি২/৩ এর আওতায় রাঙাপানি ছড়ার রহুল আমিনের বাড়ি হতে কাশেম বাড়ি পর্যন্ত ৯০ হাজার টাকার ইট সলিং রাস্তা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়েছে দাবী করা হলেও এসব সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এরাস্তা এখনো কাচা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। একই অর্থবছরে এলজিএসপি২/৩ এর আওতায় আলী আজমের বাড়ি হতে তাজুর বাড়ি পর্যন্ত ইট সলিং রাস্তা ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এ রাস্তাটি এখনো কাঁচা রাস্তা রয়ে গেছে।
এ বিষয়ে আলী আজম বলেন, শুনেছি রাস্তাটি ইট সলিং করা হবে কিন্তু করা হয়নি। এ রাস্তা দিয়ে চেয়ারম্যান হযরত আলী যাতায়াত করে। ২০১৭-১৮ সালে করার কথা ছিল কিন্তু এখন তো ২০২০ সাল চলছে।
এছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এডিপি প্রকল্পের আওতায় খাগড়াছড়ি, চাল্যাতলি, ঘনমোড় এলাকার দরিদ্র কৃষকদের মাঝে ফলজ চারা বিতরণের নামে ১ লাখ টাকা এবং একই প্রকল্পের ২০১৯-২০অর্থবছরে চাইল্যাতলি ও খাগড়াছড়ি এলাকায় দুস্থ মহিলাদের সেলাই মেশিন বিতরণ বাবদ ২লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আছে হযরত আলীর বিরুদ্ধে।
ভাসান্যাদম ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মো ইসমাইল বলেন, আমার জানামতে অভিযোগগুলো সত্য। উক্ত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন না করে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করা হয়েছে। কোথাও কোথাও একটি প্রকল্পের এলাকায় এডিপি ও এলজিএসপি দুটো প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে। বাস্তবে এগুলো কোনটি বাস্তবায়ন হয়নি। তদন্ত করলে এ অনিময় বেড়িয়ে আসবে।
অভিযোগের বিষয়ে ভাসান্যাদম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলী বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ষড়যন্ত্রের অংশ। সামনে নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে দুর্নাম ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে একটি পক্ষ। যেসব প্রকল্পের অনিয়মের কথা বলা হচ্ছে সেগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পের বিপরীতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে পাহাড়ের ভৌগলিক অবস্থাগত কারণে সে বরাদ্ধ দিয়ে পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। বরাদ্ধকৃত অর্থদিয়ে যতটুকু পর্যন্ত কাজ করা সম্ভব ছিল তা করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বলেন, স্বাভাবিকভাবে হয়তো দেখা যাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। কিন্তু বাস্তবতাকে বুঝতে হবে। যেখানে একটি ইটের দাম ৫ টাকা ধরা হয়েছে সেখানে একটি ইট শুধু পরিবহনে একটি ইটের খরচ হয়েছে ১০ টাকার উপর পড়েছে। এঅবস্থায় প্রকল্পগুলো দৃশ্যমান হয়নি। তাই বলে দুর্নীতি হয়েছে তা নয়। সীমিত বরাদ্ধ দিয়ে যতটুকু কাজ করা যায় করেছি। আমার আমলে যে উন্নয়ন কর্মকান্ড দৃশ্যমান হয়েছে বিগত কোন চেয়ারম্যানের আমলে তা হয়নি।