প্রেস বিজ্ঞপ্তি :

কক্সবাজার সিটি কলেজ হল রুমে ১৬ নভেম্বর ১১ টায় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা কেক কাটার মধ্যে দিয়ে প্রভাষক জাহাঙ্গীরের ৩০০ অনলাইন ক্লাস উদযাপন করেছেন।
এসময় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ক্য থিং অং, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আবু মো জাফর সাদেক।

করোনা এমন এক মহামারী, যা অধুনা বিশ্বের উন্নত দেশগুলোকেও ভোগাচ্ছে হরহামেশা। যার প্রভাব থেকে রক্ষা পায়নি বাংলাদেশ তথা বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাও।

ফলে গত মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের কার্যক্রম বন্ধ এবং শিক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে। তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখার স্বার্থে শিক্ষা মন্ত্রনালয় এবং শিক্ষাবোর্ড গুলো নানা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদেরকে পাঠে মনোনিবেশ করানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ক্ষতি হালকা হলেও পুষিয়ে দিতে দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো দক্ষিণ চট্টগ্রাম অন্যতম উচ্চ বিদ্যাপীঠ কক্সবাজার সিটি কলেজেও অনলাইন ক্লাসের কার্যক্রম শুরু করেন অধ্যক্ষ ক্য থিং অং।

তারই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার সিটি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম গত মার্চ থেকে এপর্যন্ত অনলাইন ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছেন। একটি দু’টি নয় এপর্যন্ত তিনি ৩১০ টি অনলাইন ক্লাস সম্পাদন করেন।

যেখানে করোনার সময় পুরো বিশ্ব স্তব্ধ হয়ে গেছে সেখানে প্রভাষক জাহাঙ্গীর একদিনের জন্যও থেমে ছিলেন না। শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে প্রতিদিনই অনলাইন ক্লাস চালিয়ে গেছেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ ক্য থিং অং প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলমকে “হিরু অফ কক্সসবাজার সিটি কলেজ” উল্লেখ করে বলেন, আমরা ক্রিকেট খেলায় বা অন্যান্য ক্ষেত্রে হরহামেশাই সেঞ্চুরি দেখতে পাই। এই প্রথম আমরা শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে একজন শিক্ষকের অনলাইন ক্লাসের ত্রিপল সেঞ্চুরি দেখলাম। প্রভাষক জাহাঙ্গীর একজন কর্তব্যনিষ্ঠ, দায়িত্ববান, উদ্যোমি এবং পরিশ্রমী মানুষ। তিনি কলেজের যে কোন কাজে আন্তরিকতার সহিত অংশগ্রহণ করে থাকেন। তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে একজন জনপ্রিয় শিক্ষক। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি। ৩০০ অনলাইন ক্লাস সারা বাংলাদেশের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা কলেজ কতৃপক্ষ তাকে যথোপযুক্ত সম্মান জানানোর চেষ্টা করবো।”

উপাধ্যক্ষ জাফর সাদেক বলেন” প্রভাষক জাহাঙ্গীর শিক্ষা এবং শিক্ষক সমাজের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। করোনা কালে তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য যা করেছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।”

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জেবুননেছা বলেন,” প্রভাষক জাহাঙ্গীর একজন শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষক। তার মতো একজন সহকর্মী পেয়ে আমরা গর্ববোধ করি। তিনি করোনালীন সময়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃক পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে অনলাইন ক্লাসের জন্য যে কয়জন শিক্ষকদের তালিকাভুক্ত করেছেন তন্মধ্যে একজন।”

প্রভাষক জাহাঙ্গীর বলেন,” করোনাকালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হলো বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীবৃন্দ। একটি জাতির উন্নতির অগ্রসোপান হচ্ছে শিক্ষা। আর শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি হালকা করে হলেও পুষিয়ে দেওয়ার চিন্তা করে আমি গত ২৪ মার্চ হতে অনলাইন ক্লাস শুরু করি। একাদশ -দ্বাদশ শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সম্মান ১ম বর্ষের “পদার্থের ধর্ম, তরঙ্গ ও স্পন্দন” বিষয় ও সম্মান ২য় বর্ষের “তড়িৎ ও চুম্বকত্ব” বিষয়ে প্রায় ৩১০+ অনলাইন ক্লাস সম্পাদন করেছি। আশাকরি এতে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হব। ”
তিনি আরো বলেন,” চেষ্টা করেছি শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করার। জানি না কতটুকু করতে পেরেছি! তবে সবার দোয়া ও সহযোগিতা পেলে আরো ভালো কিছু করার চেষ্টা করবো।
অধ্যক্ষ স্যার সত্যিই একজন ভাল মানুষ। স্যার আমাকে সব সময় সহযোগিতা করেছেন। আমি অধ্যক্ষ স্যার,উপাধ্যক্ষ স্যার, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জেবুন্নেছা ম্যামসহ সকল সহকর্মীবৃন্দ, শিক্ষার্থীবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। উনাদের সকলের সহযোগিতার কারণেই আজ আমি ৩০০ অনলাইন ক্লাসের মাইলফলক স্পর্শ করতে পেরেছি।

এসময় বাণিজ্য অনুষদ প্রধান অধ্যাপক গোপাল কৃষ্ণ দাশ, কলা অনুষদ প্রধান অধ্যাপক এস এম আকতার উদ্দিন চৌধুরী, বিজ্ঞান অনুষদ প্রধান অধ্যাপক জেবুননেছা, বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শারায়াত পারভীন, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আশফাকুর রহমান, গণিত বিভাগের অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক হাসেম উদ্দীন, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবুল কালাম, ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মং ম্রা সিন, প্রভাষক কামরুন্নাহার, নুরুল হুদা, জাফর ইকবাল, উজ্জ্বল দেব, আসমাউল হোসনা, অন্জন কুমার দে, নওশাদ চৌধুরী, আবু বাকের, এড. আব্দুল আজিজ, প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম সহ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি সবাইকে নিয়ে কেক কেটে ৩০০ তম অনলাইন ক্লাস উদযাপন করেন।