নিউজ ডেস্ক:
সমবায় সমিতির ইতিহাস প্রায় মানবসভ্যতার ইতিহাসের মতই প্রাচীন। বর্তমানের সমবায় সমিতির সাংগঠনিক রূপটি প্রতিষ্ঠিত হয় ইউরোপের শিল্পবিপ্লবের কিছু পূর্বেই। সমবায় এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে সম্মিলিতভাবে সকলের কল্যাণ হয়।

আজ ৪৯তম জাতীয় সমবায় দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন’।

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে সারাদেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দিবসটি উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে জাতীয় সমবায় পুরস্কার ২০১৯ প্রদান করা হবে। প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ পুরস্কার প্রদান করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ‘সংবিধানে মালিকানার নীতি হিসেবে সমবায়কে জাতীয় অর্থনীতির দ্বিতীয় খাত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। তাই সমবায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে সকলকে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শতাব্দী প্রাচীন এ আন্দোলন বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সমবায়ের চেতনাকে প্রবল ও অর্থবহ করে তুলেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা। তিনি দরিদ্র্য-সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভাগ্যন্নোয়নে গণমুখী সমবায় আন্দোলনের স্বপ্ন দেখেছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মানুষের মাথাপিছু জমি ও সম্পদের পরিমাণ অত্যন্ত সীমিত। তাই কৃষি ও অন্যান্য উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগসহ ব্যবসা-বাণিজ্যে পূঁজি গঠনে সমবায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে সমবায়ের যাদুস্পর্শে সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে মূল্যবোধের চর্চা ও সমবায় ভিত্তিক সমাজ গঠন করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার আহবান জানান।

তিনি বলেন, ‘সমবায় সমিতি আইন, ২০০১ এবং জাতীয় সমবায় নীতিমালা, ২০১২ প্রণয়ন করি। পুনরায় সমবায় সমিতি (সংশোধন) আইন, ২০১৩ এবং বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করি। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ‘আমার বাড়ী, আমার খামার প্রকল্প’ গ্রহণ করি। বর্তমানে এ প্রকল্পের আওতায় ১ লক্ষ ২১ হাজার ১৪২টি সমবায় সমিতি গঠন করা হয়েছে- যার উপকারভোগী সদস্য পরিবার- ৫৬ লক্ষ ৪১ হাজার।’

তিনি বলেন,‘সমবায় খাতে বাজেট বৃদ্ধি করেছি, সমবায়ীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করছি, আর্থিক ও উপকরণ সহায়তার মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনসহ সমবায়ীদের জীবনমান ও সামাজিক ক্ষেত্রে উত্তরোত্তর উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। সরকারের প্রচেষ্টায় সমবায় সমিতি এবং সমবায়ীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে সমিতি ১,৯০,৫৩৪টি এবং সদস্য ১,১৪,৮৩,৭৪৭ জনে উন্নীত হয়েছে।’