আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে প্রধান ভুল ধারণাগুলোর একটি হলো, এটা দেশটির জাতীয় নির্বাচন। কিন্তু আসলে তা নয়। এই নির্বাচন মূলত ৫১টি নির্বাচনের সমন্বয়। এর মধ্যে ৫০টি দেশটির অঙ্গরাজ্যে। অপরটি ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ায়। এতেও আবার কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। পুরো বিষয়টি স্বতন্ত্র এবং বেশ জটিলও বটে।

প্রতিটি রাজ্য মূলত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেয়ার যোগ্য হবেন তাকে নির্বাচিত করে। সব সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে আঠারো বছরের বেশি বয়সী যে কেউ এই যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন। এটা সংবিধান স্বীকৃত। উদাহরণস্বরুপ, দোষী সাব্যস্ত অপরাধীরাও কয়েকটি রাজ্যে এই ভোট দিতে পারেন।

একজনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার জন্য জাতীয়ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারের ভোটে জয়ী হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ভোটাররা ভোট দিয়ে যাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার ক্ষমতা দেন মূলত তারাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন। তাদেরকে বলা হয় ইলেকটরস। ইলেকটোরাল কলেজের হিসাবটাও আবার বেশ জটিল।

মার্কিন কংগ্রেসের দুটি কক্ষ। একটি নিম্নকক্ষ বা প্রতিনিধি পরিষদ। অপরটি উচ্চকক্ষ বা সিনেট। প্রতি রাজ্যে দুজন করে সিনেটর থাকেন। জনসংখ্যার অনুপাতে থাকে প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য। এই প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য এবং সিনেটরের সংখ্যা অনুযায়ী কোন রাজ্যে কতটি ইলেকটোরাল কলেজ হবে তা নির্ধারণ করা হয়।

মোট ইলেকটোরাল কলেজের সংখ্যা ৫৩৮টি। প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য কমপক্ষে ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজের জয়ের প্রয়োজন হয়। আগামী মঙ্গলবার অর্থাৎ ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে ৫৩৮ জন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেয়ার যোগ্য হবেন তারা আগামী জানুয়ারিতে বসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন।

তবে এ ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় একজনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কোনো রাজ্যে একজন প্রার্থী বেশি ভোট পেলে তিনি ওই রাজ্যের সব ইলেকটোরাল কলেজে জয়ী হবেন। ধরা যাক, কোনো রাজ্যে ‘ক’ নামক প্রার্থী ‘খ’ এর চেয়ে এক ভোট বেশি পেলেও ওই রাজ্যের সব ইলেকটোরাল কলেজে ‘ক’ জয়ী।

ব্যতিক্রমও রয়েছে। যেমন মেইন ও নেব্রাস্কা অঙ্গরাজ্য। এখানে গোটা রাজ্যের ভোটে দুজন ইলেকটর নির্বাচিত করা হয় এবং একজন করে হয় প্রতিটি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টে। উদাহরণ হিসেবে ২০১৬ সালে মেইন দুই ভাগে ভাগ হয়েছিল। হিলারি দুই ইলেকটরস ও ডিস্ট্রিক্টে জয় পায় অপরটি জেতে ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভোটে হেরে গিয়েও ছোট ছোট রাজ্যে জয় বা বড় রাজ্যগুলোতে সামান্য ব্যবধানে জয় পাওয়ার মধ্য দিয়েও একজন প্রার্থী প্রেসিডেন্ট হতে পারেন। যেমন গত নির্বাচনেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে ২৮ লাখ ভোট বেশি পেয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটন। কিন্তু ট্রাম্প পান ৩০৪টি ইলেকটোরাল কলেজ। হিলারি ২২৭।