খোরশেদ আলম


হযরত মুহাম্মদ দঃ কে অবমাননাকর চিত্র আঁকার কারণে বিশ্ব ব্যাপী ফ্রান্স পণ্য বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে । কিন্তু এখানে একটা বিষয় বোধগম্য নয় যে, বৃহৎ রাস্ট্র ফ্রান্সের সামরিক বাহিনী, পুলিশ বাহিনী এতই দুর্বল যে, হাতে শুধুমাত্র একটা ছুরি থাকা চেচেন সেই ছেলেকে গুলি করতে হবে ?
মনে হয় ওদের বাহিনী মানসিকভাবে দুর্বল ও ভীত হয়ে পড়ে যদি দেখে ছুরি হাতে একজন মুসলমান যুবক ?
মুসলমান ছেলেটি ছুরি দিয়ে শিক্ষককে আঘাত করায় মনে হয় সে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা পায়নি । সে উত্তেজিত না হয়ে বুদ্ধিমান হলে এবং ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে ভাল জ্ঞান থাকলে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিতে পারত – তাহলে আপনার ধর্মের নবীর ব্যঙ্গচিত্র আঁকেন । সেখানেই প্রমান হয়ে যেত, তারা আসলে বাক-স্বাধীনতার চর্চা করে নাকি শুধুমাত্র ইসলামের নবীর অবমাননা করে ?
তার একমাত্র কাজ ছিল মুরুব্বীদের সাথে আলোচনা করে আইনের দ্বারস্থ হওয়া, যা না করায় করোনা’র এই দুঃসময়ে বিশ্বের প্রায় সকল মানুষ সাময়িক ও সুদূরপ্রসারী অসুবিধায় পড়ে গেল ।
১। সুরা আল মায়িদাহ’র ৩২ নম্বর আয়াতে পরিস্কারভাবে উল্লেখ আছে , ” শুধুমাত্র হত্যার বিনিময়ে হত্যা অন্যথায় নয় । হত্যার বিনিময়ে না হয়ে যদি কাউকে হত্যা করে সে সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করল আর কাউকে যদি রক্ষা করে সে সমগ্র মানবজাতিকে রক্ষা করল ।
২। বোখারী শরীফ হাদীস নম্বর ২১৪ (ওযু পর্ব), হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন, ” কোন এক বেদুইন মসজিদে দাঁড়িয়ে পেশাব করায় লোকেরা মারধরের জন্য তাকে ধমকিয়ে উঠল । তখন হযরত মুহাম্মদ দঃ লোকদেরকে বললেন, ওকে ছেড়ে দাও এবং ওর পেশাবের উপর এক বালতি পানি ঢেলে দাও । আল্লাহ তোমাদেরকে মানুষের সাথে নম্র ব্যবহার করার জন্য সৃষ্টি করেছেন , কঠোর ব্যবহারের জন্য নয় । ”
কেউ কি ভাবতে পারবে রাসুল দঃ এর এত সুন্দর আচরণ, এত সুন্দর ব্যবহার, এত সুন্দর শিক্ষা?
৩। সুরা আল ইমরান আয়াত নাম্বার ১৫৯ — “আল্লাহ’র রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হ্নদয় হয়েছেন পক্ষান্তরে আপনি যদি রাগ ও কঠিন হ্নদয় হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত । কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফেরাত কামনা করুন এবং কাজে কর্মে তাদের পরামর্শ গ্রহণ করুন । ”
উপরোক্ত হাদীস এবং কোরআনের আয়াত যদি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও সেই শিক্ষক জানতো মানবতা কাহাকে বলে বুঝতে পেরে নিজেদের ভুলের জন্য
মাথা অবনত করত । অথচ একজন মুসলমানের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব ছিল কোরআনের বানী ও রাসুল দঃ মানবজাতীর জন্য যে নির্দেশনা রেখে গেছেন তা তাদের মাঝে পৌঁছে দেওয়া । কিন্তু আমরা সেই মুল কাজ না করে রাসুল দঃ এর শান-মান নিয়ে এতই ব্যস্ত হয়ে গেছি যে , যা রাসুল দঃ এর নির্দেশনা’য় নাই ।
শুধুমাত্র দায়িত্ব পালনে, আল্লাহ’র সম্মুখে কেয়ামতের মাঠে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে,
আল্লাহ তায়ালা’র নির্দেশিত রাসুল দঃ এর দেখানো পথ ও কোরআন হাদীসের শিক্ষা বিশ্বের অমুসলিমদের মাঝে পৌঁছে দেওয়াই হ’ল একজন মুসলমানের সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ । মুসলমানদের আসল সত্য জানার সময় এসেছে , নিজে জানুন বিভ্রান্তকারীদের বরং বয়কট করুন। আমিন ।