মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া:
বিশালাকার ডজন খানেক অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ইজারা বিহীন বালু উত্তোলন চলছে দেদারসে। চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীর ছড়ায় ইজারা বিহীন অংশে এ ধ্বংসযজ্ঞ কার্যক্রম চলছে দীর্ঘ সময় ধরে। পাশেই রয়েছে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এটি খুটাখালীর ১নং ওয়ার্ড হরিখোলা এলাকায় চল্লিশ শতক জায়গায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। প্রশাসনিক তদারকি না থাকায় অবৈধ বালু উত্তোলন কাজে জড়িতরা দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। তবে সেখানে নামে ছড়াখাল থাকলেও বাস্তবে তার কোন অস্তিত্ব দেখা যাচ্ছে না। ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। কয়েক ডজন বিশাল ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করে দিয়েছে স্কুল পাশের সুন্দর পরিবেশ। বসতঘর ও চাষের জমি বিলিন হওয়ার অভিযোগও রয়েছে অহরহ।
গত কয়েক বছরে পাশাপাশি ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদ। কিন্তু ড্রেজার মেশিনের বিকট শব্দে চরম ব্যঘাত সৃষ্টি হয় স্কুল মাদ্রাসার পাঠদান ও মসজিদে নামাজ আদায়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব বিধ্বস্ত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে পরিবেশ রক্ষাকারী কোন দপ্তর এপর্যন্ত দৃশ্যমান কোন অভিযানে আসেন নি। মোটা অঙ্কের বিনিময়ে এসব সেক্টরকে ম্যানেজ করে তাদের অবৈধ কাজগুলো চালিয়ে যাচ্ছে বলে ধারণা করছে সচেতন মহল।
বালু দস্যুদের বেপরোয়ায় বালু উত্তোলন ও পরিবহনে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা স্কুলের সর্বাধিক পরিমাণ জায়গা দখলে যাচ্ছে আর পার্শ্ববর্তী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেরও চরম ব্যাঘাত ঘটছে। এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ চায় এলাকার সাধারণ জনগণ। জানা গেছে জড়িত বালু ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছে, খুটাখালী ৬নং ওয়ার্ড হরিখোলা এলাকার হাবিবুল্লাহ সওদাগরের পুত্র নুরুল আবছার, একই ওয়ার্ডের চঁটিবিল এলাকার জব্বর হাজীর পুত্র সাইফুল কোম্পানি, তার ভাই নজরুল, জঙ্গল খুটাখালী এলাকার আলী আহমদের পুত্র কাউছার, ফরেস্ট অফিস পাড়া এলাকার বশর মৌলবীর পুত্র আবদুল্লাহ, দরগাহ পাড়া লম্বাথালী এলাকার কালা মিয়ার পুত্র ইব্রাহীম সহ আরো রয়েছে।
এ বিষয়ে জড়িতদের অবগত করা হলেও কোনপ্রকার কর্নপাত করছে না বলে জানিয়েছেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি বেলাল আজাদ। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ থাকার সুযোগে ড্রেজার মেশিন ও বালু অপসারন করে স্কুলের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে জড়িতদের অনেকবার বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা কোন প্রকার কর্নপাত করেনি। কিছুদিনের মধ্যে যদি তারা কথা না শুনে তাহলে স্কুল পরিচালনা পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করা হবে।
এসবের কারণ বা প্রতিকারের উপায় জানতে বালু পয়েন্টের শেয়ারদার ও বালু পয়েন্ট নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদনকারী ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার আনুয়ার হোসেনের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এ বিষয়ে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সংযুক্তা দাশ গুপ্তা জানান, বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। আমরা এটি খোঁজ খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব। জড়িতরা যেই হউক কিছুতেই ছাড় দেওয়া হবে না বলেও তিনি জানান।