মো. শাহ্ নেওয়াজ,ঢাবি:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(ঢাবি) শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তারকে ধর্ষণ,নিপীড়ন ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধী ও সিলেট এমসি কলেজ,খাগড়াছড়ি ও সাভারের ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। রবিবার(২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১.৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাষ্কর্যের পাদদেশে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়,সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য,ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস,সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন এবং কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

এ সময় দেশের সব ধর্ষণের বিচার দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা । পাশাপাশি বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনের মাধ্যমে ৩০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার দাবি জানান তারা।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, করোনাকালীন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছি না। তারা কিভাবে ক্যাম্পাসে অবস্থান করেছে এটা আমাদের বোধগম্য নয়।

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রবাসে ধর্ষণের বিষয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে আমাদের ছাত্রদলের কোনো কমিটি নেই। আমাদের ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে গেলে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে গেলে নির্দিষ্ট কিছু মেইন্টেন করতে হয়। তাদের বয়স থাকা লাগে, তাদের ছাত্রত্ব থাকতে হয়, তারপর ছাত্রলীগের আদর্শ ধারণ করার পরে সে ছাত্রলীগের কর্মী হতে পারবে।

ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, গত কয়েক দিনে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেসব ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেছে এসব ঘটনায় যারা জড়িত তাদেরকে বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার জন্য আমাদের এই বিক্ষোভ। আমরা চাই, তাদের শাস্তির মাধ্যমে যেন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়। দুষ্কৃতিকারীরা যাতে অপকর্ম করার সাহস না পায়। সেজন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, ধর্ষক যেই হোক না এটাকে রাজনৈতিক রূপ না দিয়ে ধর্ষকের বিচারের দাবিতে আমাদের সকলকে সোচ্চার হতে হবে।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে নাট্যকার ও নাটকবাজ আখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। তিনি বলেছেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের বিচার না পেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবে, তা হতে পারে না। এর বিচার হতে হবে। এ সময় তিনি নুরদের সংগঠনকে ‘ধর্ষণ অধিকার পরিষদ’ হিসেবে উল্লেখ করে তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়ার আহ্বান জানান।

ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, তারা ধর্ষণও করবে, আবার আন্দোলনও করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ইতিহাস নেই। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে নুরের সহযোগীর মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে হুশিয়ার উচ্চারন করেন। জয় বলেন, ‘‌নুরের চেলা’ আমার নেত্রী সম্পর্কে বক্তব্য দিয়েছে। আমি হেসেছি। ছাত্রলীগ কিন্তু কোনো অন্যায়কে প্রশ্ন দেবে না। সাবধান!

জয় আরো বলেন, ফেসবুকে লাইভ করে হুমকি দেয়ার কথা তো আগে কখনও শুনিনি। অথচ নুর সেটা করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নাটক করেছে সে। গুজবের মাধ্যমে ভিপি পদ বাগিয়ে নেয়া নুরের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে। কিছুদিন আগে তারা অডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে সে টেন্ডারবাজির কথা বলেছে।

জয় বলেন, নুর সব ডাকসু ভিপির মর্যাদা হানি করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ‌পতিতা আখ্যায়িত করেছে, এত সহজ? তিনি বলেন, এই ধর্ষকের কোনো দল নেই। এই কুলাঙ্গাররা যেই হোক, তার বিচার করতে হবে। এ সময় তিনি ঘোষণা দেন, ফাতেমা আপনার কোনো ভয় নেই, ছাত্রলীগ আপনার সাথে আছে।

জয় আরো বলেন, কীসের ছাত্র অধিকার পরিষদ, তারা তো ‘ধর্ষণ অধিকার পরিষদ’ খুলে বসেছে। যেখানেই এই ধর্ষকদের পাবেন, তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন। নুর-কামাল হোসেনদের বাংলাদেশের শত্রু আখ্যায়িত করে তাদেরকে দেশ থেকে চলে যাওয়ার আহ্বানও জানান জয়।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরাও বক্তব্য রাখেন।