কাইমুল ইসলাম ছোটনঃ
জন্ম-মৃত্যু। জন্ম যখন হয়েছে মৃত্যু হবে এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম। কিন্তু অস্বাভাবিক মৃত্যুকে মেনে নেওয়া যায় না। মেধাবী ছাত্র তোফাইলের মৃত্যুতে ব্যথিত লজ্জিত। করুণ মৃত্যুর ঘটনাটি অামাদের ভীষণ কাঁদাচ্ছে।

দুরন্ত ছেলে তোফাইল। খুব ভদ্র। মেধাবি ও অমায়িক। হাঁটি হাঁটি পাপা করে বেড়ে ওঠা নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে চলছিল ছেলেটা। চট্টগ্রাম কলেজের দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তোফাইলের ইচ্ছা ছিল দেশ সেরা মানুষ হওয়ার। পারলো না তো! হেরে গেল চিরতরে। চলে গেল না ফেরার দেশে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার-মহেশখালী নৌ রুটে যাত্রীবাহী গামবোট নিয়ন্ত্রণ হারালে ফিশিং বোটের সাথে ধাক্কা লাগে। তখন গামবোট থেকে যাত্রী পড়ে গেলে তোফাইলকে অার খোঁজে পাওয়া যায় নি। পরের দিন লাশ মেলে তার।

ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস!
নিজেদের সিস্টেমের দূর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে একটি প্রাণ চিরতরে ঝরে গেল।
এর জন্য দায়ী কে? অামি? অাপনি? অসচেতনতা ও ত্রুটিযুক্ত ব্যবস্থা?

হ্যাঁ, নিশ্চই অসচেতনতা ও ত্রুটিযুক্ত ব্যবস্থা। যার কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা।

প্রতিনিয়ত বোটের সংখ্যা বাড়তেছে, বাড়তেছে না দক্ষ চালকের সংখ্যা। নির্দিষ্ট নিয়ম থাকলেও মানতেছে না কেউ। অর্থ উপার্জনের লড়াইয়ে চলছে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা। যাত্রীদের দেওয়া হচ্ছে না লাইফ জ্যাকেট। ঝোপ বুঝে অতিরিক্ত ভাড়া অাদায়, যেন জোর যার মুল্লুক তার।

কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, দক্ষ বোট চালকের লাইসেন্সের ব্যবস্থা করুন। লাইসেন্স ছাড়া কেউ যেন বোট চালাতে না পারে। যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট দেওয়ার ক্ষেত্রে নজর দিন। যাত্রীদের সেবার সর্বোচ্চ স্তরের গুরুত্ব দিন। অাইন না মানলে প্রয়োজনীয় শাস্তির ব্যবস্থা করুন।
না হলে অামাদের অারো অনেক তোফাইলকে হারাতে হবে। যে মৃত্যু শুধু পরিবারকে নয়, সমাজ, রাষ্ট্র ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তখন দায়ভার কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। কারণ, অাজকের শিশুরাই অাগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ থেকে উপকৃত হত পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও সমগ্র বিশ্ব। কিন্তু তোফাইল চলে গেল, যা কারো কল্পনা ছিল না।
তোফাইলের মত যেন অার কারো প্রাণ না যায়। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এসব ঘটনায় দায় এড়াতে পারেনা প্রশাসন।

কাইমুল ইসলাম ছোটন
শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ
রাঙামাটি সরকারি কলেজ ।