ইমাম খাইরঃ
কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালীতে জামাইর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন শ্বশুর নুর কবির (৪৫)। ঘটনায় ছুরিকাহত শাশুড়ি নুর জাহান বেগম (৪০)কে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মশরফ পাড়ায় ঘটনাটি ঘটে।
ঘাতক জামাতা মিজানুর রহমান (২৮) পলাতক রয়েছে।
সে একই ইউনিয়নের বানিয়া পাড়ার বাসিন্দা আমির হোসেনের ছেলে।
নিহত নুর কবির পেশায় কাঠ মেস্ত্রি।
ইউনিয়নের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান বর্তমান ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফজলুল হক স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, জামাইর সাথে বনিবনা সমস্যার কারণে নিজের বাপের বাড়িতে চলে যায় স্ত্রী জেরিন আক্তার। কৌশলে সেখানে গিয়ে শ্বশুরকে খুন করে জামাই মিজানুর রহমান।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, নুর কবিরের মেয়ে জেরিন আক্তারের সাথে দেড় বছর আগে মিজানুর রহমানের বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে ছয় মাস বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
মিজানুর রহমান প্রবাসে ছিল। দেশে ফিরে বউকে দেওয়া ৭ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করে দেয়। এগুলো শেষ হলে স্ত্রীকে বাপের বাড়ি হতে টাকা এনে দেওয়ার জন্য নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতন সইতে না পেরে জেরিন আক্তার তার গরীব কাঠমেস্ত্রী পিতার নিকট থেকে ১ লক্ষ টাকা এনে দেয়। এরই মধ্যে মাদকসেবন ও জুয়ার আসরে মেতে ওঠে মিজান। আবারো বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে চাপ দেয়। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর কথা কাটাকাটি হয়। স্ত্রীকে প্রচুর মারধর করে। নিরুপায় হয়ে বাপের বাড়ি চলে যায় জেরিন। তাতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে রাতের আধারে শ্বশুর বাড়িতে ঢুকে ছুরিকাঘাত করে। স্থানীয়রা শ্বশুর ও শাশুড়িকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে রাত ৩ টার দিকে শ্বশুর নুর কবির মারা যান।
শাশুড়ি নুর জাহান বেগমের সারা শরীরে ছুরিকাঘাত রয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করেছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান।
এ বিষয়ে থানার ওসির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মাসুম খান জানান, বিরোধের সূত্র ধরে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঢুকে স্ত্রীকে মারধর করে স্বামী মিজানুর রহমান। তাতে বাধা দিতে গেলে শ্বশুর-শাশুড়িকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মারা যায় শ্বশুর। শাশুড়িকে গুরুতর আহত অবস্থায় রেফার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মাসুম খান।