মোহাম্মদ হোসেন,হাটহাজারী :
হেফাজতের আমীর ও হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালকের মৃত্যুতে হাটহাজারীসহ সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মূত্যুর খবর পৌঁছার সাথে সাথে সাথে সাথে বিভিন্নস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। মসজিদের মাইকে মৃত্যুর খবর প্রচার করার সাথে সাথে চারি দিক থেকে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এ দিকে চট্টগ্রাম-হাটহাজারী,রাউজান সড়ক,খাগড়াছড়ি সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
মাদরাসা ছাত্ররা রাস্তায় নেমে আসে। আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর খুলে দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রধান ফটক। দুদিনের আন্দোলনের সময় বন্ধ থাকার পর জুমার নামাজের সময় ওই ফটক খোলা হলেও জুমার নামাজ শেষে ফটকটি আবারও বন্ধ করে দিয়েছিল শিক্ষার্থীরা।

তবে এখনও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বাইরে কাউকেই মাদ্রাসা ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। মূল গেইটে চেকপোস্ট বসিয়ে আইডি কার্ড দেখে দেখেই শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসায় প্রবেশ করানো হচ্ছে। আল্লামা আহমদ শফীর জানাজার সময় ফটক সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে । মাদ্রাসার একজন শিক্ষার্থী সিবিএনকে বলেন, ‘বড় হুজুরের মৃত্যুর খবরে মুহূর্তেই মাদ্রাসার সব কার্যক্রম স্তব্ধ হয়ে গেছে। পুরো মাদ্রাসায় কান্নার রোল পড়ে গেছে। এই ধরনের খবরের জন্য আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম না।

আগামীকাল শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জোহরের নামাজের পর হাটহাজারী মাদ্রাসায় আল্লামা আহমদ শফীর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। শুক্রবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আল্লামা শফীর ছেলে ও হেফাজতের প্রচার সম্পাদক মাওলানা আনাস মাদানী।

হেফাজত আমিরকে ঢাকার জামিয়া ফরিদাবাদ মাদ্রাসায় গোসল ও কাফন পরিয়ে শুক্রবার আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টায় হাটহাজারীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়া হবে। হেফাজত আমিরের সাবেক প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ  এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগের পরে হাটহাজারী মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদ (মজলিসে শুরা কমিটি) তাকে মহাপরিচালক পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে মাদ্রাসার উপদেষ্টা (সদরে মুহতামিম) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

ওই দিনই ছাত্র বিক্ষোভের মুখে অবরুদ্ধ অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েন আল্লামা শাহ আহমদ শফী। মাদ্রাসার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে চট্টগ্রাম হাসপাতালে নেয়া হয়।

শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা আল্লামা শফীকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে শুক্রবার সন্ধ্যার আগে ঢাকায় এনে আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

প্রায় শতবর্ষী আল্লামা আহমদ শফী দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি বার্ধক্যজনিত দুর্বলতার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।