মো. নুরুল করিম আরমান, লামা:
বান্দরবানের লামা উপজেলায় পরিবেশ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাহাড় কেটে ঝিরি ভরাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, ঝিরি ভরাটের ফলে সদ্য নির্মিত একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক ধসে পড়ে। বর্তমানে একটি সেতুও হুমকির মুখে রয়েছে। উপজেলার লামা সদর ইউনিয়নের পশ্চিম হাসপাতাল পাড়ার বাসিন্দা মৃত শাহ আলমের ছেলে মো. ফরিদ উদ্দিন দম্পত্তির বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দুপুরে এ অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। তারা এ ঘটনায় বান্দরবান জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

অভিযোগ জানা যায়, এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে প্রায় ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে পশ্চিম হাসপাতাল পাড়া ও ডলুঝিরি বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য ঝিরির পাশ দিয়ে একটি সড়ক নির্মাণ করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। লামা সদর ইউনিয়নের ডলুঝিরি ও পশ্চিম হাসপাতাল পাড়ার কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এ সড়কটি। গত বছর এটি নির্মাণের পর থেকে সড়কের পাশের বাসিন্দা মো. ফরিদ উদ্দিন পাহাড় কেটে ঝিরিতে মাটি ফেলা শুরু করেন। অথচ পরিবেশ আইনে পাহাড় কাটা ও ঝিরির ভরাট করে গতি পরিবর্তন করা যাবেনা মর্মে উল্লেখ রয়েছে। বিভিন্ন সময় এলাকাবাসী পরিবেশ বিধংসী এসব কর্মকান্ডে বাধা প্রদান করলেও নিষেধ উপেক্ষা করে পাহাড় কেটে ঝিরি ভরাট করতে থাকেন ফরিদ ও তার স্ত্রী শামসুন নাহার। এতে দিন দিন ঝিরি ভরাট হয়ে ঝিরি দিয়ে প্রবাহিত পানির গতি পরিবর্তন হয়ে সড়কের বেশির ভাগ অংশ গত ৩দিন আগে ধসে পড়ে। এতে চলাচল বন্ধ হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েন ওই এলাকার কয়েকশ পরিবারের হাজারো মানুষ। পাশাপাশি সড়কটি ধসে পড়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করায় এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

ঝিরি ভরাটের কারণে সড়ক ধসে পড়ার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সাইফুদ্দিন, সাবেক ছাত্রলীগ সভপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, স্থানীয় জাফর ও এমরান বলেন, ঝিরি ভরাটের সময় ফরিদ ও তার স্ত্রীকে অনেকবার বাধা দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা বাধা উপেক্ষা করে ঝিরি ভরাট করলে সদ্য নির্মিত সড়কটি ধসে পড়ে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মো. ফরিদ ও তার স্ত্রী শামসুন নাহারের বিরুদ্ধে বান্দরবান জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছি।

লামা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, ফরিদকে অনেক বার নিষেধ করেছি। কিন্তু তিনি নিষেধ উপেক্ষা করে পাহাড় কেটে ঝিরি ভরাট করেছেন। তার কারণে এখন হাজারো মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে অভিযুক্ত মো. ফরিদ উদ্দিন মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি এখন গরু বাজারে আছি। পরে কথা বলবো।

এ বিষয়ে লামা পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ঝিরি ভরাটের কারণে সড়ক ভেঙ্গে পড়েছে বলে শুনেছি। তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।