আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। দেশটির রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিলে (ওয়ানএমডিবি) দুর্নীতির প্রথম মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। কয়েক লাখ ডলার দুর্নীতির দায়ে তার বিরুদ্ধে আনা সাতটি অভিযোগেই দোষী প্রমাণিত হয়েছেন মালয়েশিয়ার এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

কুয়ালালামপুর হাই কোর্টের বিচারক মোহাম্মদ নাজলান মোহাম্মদ গাজালি মঙ্গলবার নাজিব রাজাককে দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, এই মামলার সব তথ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ তার বিরুদ্ধে আনা সব ধরনের অভিযোগেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন নাজিব রাজাক। যদিও নিজের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছেন তিনি।

মালয়েশিয়ার সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ নিয়ে বিচার হচ্ছে তা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ঘটনা। নাজিব রাজাক কমপক্ষে ৫৫০ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়ে তা অবৈধভাবে পাচার করেছেন। এই ঘটনা ঘটেছে ২০১১ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে। তখন তিনি ক্ষমতায় ছিলেন।

২০০৯ সালে ‘দ্যা ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভলপমেন্ট বারহাড’ বা ওয়ানএমডিবি নামের ওই তহবিলটি সরকারিভাবে গঠন করা হয়। তখন নাজিব রাজাক মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নে বিনিয়োগের জন্য তহবিলটি গঠন করে তৎকালীন সরকার। ২০১৫ সালে ব্যাংক এবং বন্ডহোল্ডারদের অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে এই তহবিলের কার্যক্রম নিয়ে প্রথম প্রশ্ন ওঠে।

নাজিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তহবিলটি থেকে আনুমানিক সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার অবৈধভাবে সরিয়ে তা কেউ নিজের পকেটে পুরেছেন। এই অর্থ নাজিব রাজাক ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী, নাজিবের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রতিটিতে তাকে ১৫ থেকে ২০ বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা হতে পারে। তবে তার আইনজীবীরা সাজা ঘোষণা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছেন। অপরদিকে নাজিব বলছেন, তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।