কক্সবাজার সদর মডেল থানার অভিযানে গত ৬ মাসে ৩৩টি অস্ত্র ও বিপুল পরিমান মাদক উদ্ধার

বলরাম দাশ অনুপম :
করোনা সংক্রমন রোধের পাশাপাশি আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ। অফিসার ইনচার্জ থেকে শুরু করে এই থানার কনস্টেবল পর্যন্ত দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন মানুষের নিরাপত্তায়। আবার কখনো খাদ্য সামগ্রী নিয়ে হাজির হচ্ছেন অসহায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের ঘরে ঘরে।
তাছাড়া করোনা কালীন সময়ে হাজারো মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি ৩ মাস ধরে পথশিশু ও ছিন্নমূল মানুষদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে রান্না করা খাবার। করোনা সংক্রমন রোধ, করোনাকালীন আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে এই থানার একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
তবুও হাল ছাড়েন নি এসব পুলিশ সদস্য। মনোবল শক্ত করে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার)-এর দিক নির্দেশনায় এবং অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আবু মোঃ শাহজাহান কবিরের নেতৃত্বে কাজ করে যাচ্ছেন সদর মডেল থানার সকল সদস্যরা। ফলে করোনাকালীন সময়ে কমে এসেছে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ।
এদিক গত ৬ মাসে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে বিপুল অস্ত্র ও মাদক। আর মোট মামলা হয়েছে ১৭০টি। এসব মামলায় আটক করা হয়েছে ১ হাজার ৪৯১ জন আসামীকে।
তাছাড়া ৩৩টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩২টি দেশীয় তৈরি এলজি ও ১টি বিদেশী পিস্তল, ৫০টি ছোরাসহ বিভিন্ন ধরণের দেশীয় তৈরি অস্ত্র। উদ্ধার করা হয়েছে ২ লক্ষ ৬৯ হাজার৭৪৩ পিস ইয়াবা, ৩ হাজার ৩৫ লিটার মদ, ৪৫ বোতল ফেন্সিডিল, ২০ পুরিয়া হেরোইন ও ৫ কেজি ৩’শ গ্রাম গাঁজা। শুধু তাই নয় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে যাতে গরুসহ অন্যান্য গবাদি পশু চুরি না হয় সেজন্যও কাজ করছে পুলিশ।
শহরের গোলদিঘীর পাড়ের ব্যবসায়ী রাজিব জানান-গত ৬ মাসে শহরে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি যেভাবে উন্নতি হয়েছে তা আসলে পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ দেয়ার মত। কারণ তাদের সুযোগ্য নেতৃত্বে আমরা গত ৬ মাসে অনেকটাই নিরাপদ ভাবে বসবাস করতে পেরেছি।
একই ভাবে জানান-খুরুশকুল টাইম বাজার এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধ হাশেম আলী। তিনি বলেন-আমরা মনে করেছিলাম করোনার সময় যখন পুলিশ ব্যস্ত থাকবে তখন চুরি-ছিনতাই বাড়বে। কিন্তু সদর থানা পুলিশের সাহসী ভূমিকায় তা হয়নি। সেজন্য সদর থানার ওসিসহ সকল পুলিশ সদস্যকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) মাসুম খান জানান-পুলিশ জনগণের সেবক। জনগণের নিরাপত্তা দেয়া ও আইন শৃংখলা স্বাভাবিক রাখায় হচ্ছে পুলিশের কাজ। সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
অন্যদিকে ওসি (তদন্ত) মোঃ খায়রুজ্জামান বলেন-করোনকালীন সময়েও পুলিশ মানুষকে নিরাপত্তা দিয়েছে। এসব কাজ করতে গিয়ে আমিসহ সদর থানার অনেক পুলিশ করোনা আক্রান্ত হয়েছে। তবুও মনোবল শক্ত করে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আবু মোঃ শাহজাহান কবির জানান-পুলিশের দায়িত্ব হলো জনগণের নিরাপত্তা দেয়া। সেটা যেকোন দুর্যোগ কিংবা সংকটময় মুর্হুত্বে। সেই মনমানসিকতা নিয়েই সুযোগ্য পুলিশ সুপার স্যারের দিক নির্দেশনায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি সফলতার দাবীদার সদর থানার সকল পুলিশ সদস্যরা এমনটাই জানিয়ে আগামীতে যাতে এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেন সেজন্য সকল পুলিশ সদস্যসহ জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন।