মোঃ আকিব বিন জাকের, মহেশখালী:
মহেশখালী-কক্সবাজার ঘাটে সামাজিক দুরত্বের অযুহাতে ইচ্ছে মতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এতে দুর্ভোগ-হয়রানির শিকার যাত্রীরা।

বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী। এই দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী হতে কক্সবাজার যাতায়াতের অন‍্যতম মাধ্যম মহেশখালী টু কক্সবাজার নৌপথ। উক্ত নৌপথে বিভিন্ন কাজে প্রতিদিন হাজারো মানুষের ছুটতে হয় পর্যটন নগরী কক্সবাজারে। এছাড়া চট্টগ্রাম, ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন দূরবর্তী স্থানে পড়ি জমাতে প্রথমেই যেতে হয় কক্সবাজার। পেরিয়ে যেতে হয় উক্ত নৌপথ। এককথায় মহেশখালীর চার লক্ষাধিক মানুষ প্রত‍্যক্ষভাবে উক্ত যোগাযোগ ব‍্যবস্থার সাথে জড়িত।

এদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে স্পীড বোট ও গাম বোটে পূর্বের তুরনায় অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। যার কারণে নির্দিষ্ট ভাড়ার দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। পূর্বে স্পীড বোটে যাত্রী প্রতি ৭৫টাকা ভাড়ায় ১১জন যাত্রী এবং গাম বোটে ৩০ টাকা ভাড়ায় ৪০ জন করে যাত্রী নিয়ে মহেশখালী- কক্সবাজার পারাপার করতো। অপরদিকে মহেশখালী ঘাট থেকে চৌফলদন্ডী ঘাটে জনপ্রতি ৬০টাকা ভাড়ায় সর্বনিম্ন ১০ জন যাত্রী নিয়ে গাম বোট পারাপার করত। করোনাকালীন সময়ে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতকল্পে ১৪০টাকা ভাড়ায় ৬জন যাত্রী নিয়ে স্পীডবোট এবং ৭০ টাকা ভাড়ায় ৩০ জন যাত্রী নিয়ে গামবোট চলাচল করছে। কিন্তু মহেশখালী থেকে চৌফলদন্ডী ঘাটে গামবোটে করে পূর্বে ১০ জন যাত্রী নিয়ে ৬০টাকা ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করলেও বর্তমানে সামাজিক দুরত্বের অযুহাতে ২০/২৫ জন যাত্রী নিয়েও জনপ্রতি ১২০ টাকা ভাড়া নেয়া হচ্ছে। যা অতিরিক্ত হচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন।

গতকাল মহেশখালী ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, বোটে উঠার জন্য সামাজিক দুরত্ব না মেনে যাত্রীরা ঘাটে ভীড় করছে এবং হুমড়ি খেয়ে স্পীড বোটে ১০/১২ জন উঠে যায়। পরে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতের অযুহাতে বাকিদের নামিয়ে দিয়ে ৬জন নিয়ে বোট চলে যায়। এতে সামাজিক দুরত্বের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ বলে সচেতন মহল মনে করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী জানান, গত ৪জুলাই মহেশখালী ঘাটে বোট সংকটের কারণে ঘাটে যাত্রীদের জ্যাম ছিল। ঐ সময় তাকে সহ স্পীডবোটে ৯ জন যাত্রী নিয়ে কক্সবাজার ঘাটে যায়। সেখানে জনপ্রতি ১৪০টাকা ভাড়া আদায় করে। যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে খারাপ আচরণ করে বোট চালক। যাত্রীদের ভীড় থাকলে নির্ধারিত ভাড়া নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করে স্পীডবোট চালকরা। এমনটি অভিযোগ করছে যাত্রীরা।

ঘাটে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ না থাকায় বাড়ছে করোনা ঝুঁকি এবং সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করার অযুহাতে জনসাধারণকে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে। যার কারণে সাধারণ মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি।

দীর্ঘদিন ধরে উক্ত অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ মাধ‍্যম সহ বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ জানালেও ব‍্যাবস্থা নিচ্ছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

স্বাস্থ্যঝুকি নিরসনে দৃশ‍্যমান ব‍্যাবস্থা গ্রহণ পূর্বক ভাড়া কমিয়ে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগী জনসাধারণ।