মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজার জেলায় প্রায় ৩ বছর বন্ধ থাকার পর জন্মনিবন্ধন প্রক্রিয়া কঠিন শর্ত সাপেক্ষে খুলে দেওয়া হচ্ছে। রোববার ১২ জুলাই অনলাইন প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত কক্সবাজার জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ (ইউএনও) হচ্ছেন-জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত নিজ নিজ উপজেলার টাস্কফোর্স কমিটির প্রধান। জন্মনিবন্ধন পেতে আগ্রহীরা নির্ধারিত ফরমে টাস্কফোর্স প্রধানের বরাবরে আবেদন করবেন। আবেদেন যাচাই-বাছাই করে সঠিক পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদেকে আবেদনকারীর বরাবরে জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু করার জন্য টাস্কফোর্স থেকে বলা হবে। আর আবদেন যাচাই-বাছাই এ অসম্পূর্ণ কিংবা আবেদনকীরর প্রদত্ত তথ্য সঠিক না হলে তা বাতিল করা হবে।

জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন আরো বলেন-অনলাইন প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যুতে কেউ যাতে অনিময় ও অনৈতিকতার আশ্রয় নিতে না পারে, সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরনার্থী বা জন্মনিবন্ধন সনদ পাওয়ার অযোগ্য কাউকে জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদান করা হলে তাদের কঠোর আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া নাগরিকদের অনুকূলে পাসপোর্ট ইস্যুতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাঃ শাজাহান আলি সহ অনলাইনে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান, প্রতিনিধি ও সদস্যরা অংশ নেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মায়ানমার থেকে পালিয়ে এসে প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা শরনার্থী কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪ টি শরনার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। এসব রোহিঙ্গা শরনার্থী বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে তৎপর হয়ে উঠে। ফলে সরকার কক্সবাজার জেলা ও তিন পার্বত্য জেলায় জম্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু বন্ধ করে দেয়। তখন থেকে দীর্ঘ প্রায় তিন বছর অর্থাৎ ৩৪ মাস জম্মনিবন্ধন কার্যক্রম সম্পুর্ন বন্ধ থাকার পর কক্সবাজার জেলায় জন্মনিবন্ধন প্রক্রিয়া আবার চালু করা হচ্ছে।

রোববার অনষ্ঠিত সভায় লকডাউন পরবর্তী সময়ে সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালনপূর্বক পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে নির্ধারিত সময়ে দোকানপাট, শপিংমল খোলা রাখা ও গণপরিবহন চলাচল মনিটরিং, যাচাই-বাছাই পূর্বক জন্ম নিবন্ধন প্রদান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা মাঠে পশুর হাট ব্যবস্থাপনা, অনলাইন পশুর হাট জনপ্রিয় করণ, পর্যটন স্পটসমূহ খুলে না দেয়া পর্যন্ত বন্ধরাখা নিশ্চিতকরণ, ভার্চুয়াল আদালত সফলভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, গ্রাম আদালত পেন্ডিং মামলা সমূহ নিষ্পত্তিকরণ, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশেপাশের এলাকায় সমন্বিত টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা, কক্সবাজার-টেকনাফ সংযোগকারী সড়কসহ ক্ষতিগ্রস্ত সড়কসমূহ মেরামতকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, কোরবানিকে সামনে রেখে গরু-মহিষ চুরি ডাকাতি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ, মহাসড়কে পরিবহন হতে চাঁদাবাজি নিবৃত্তকরণে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণসহ জেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।