ফাইল ছবি

সিবিএন, উখিয়া :

উখিয়াতে এড. মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী তাঁর D#2 নম্বর নিজ বেডেই ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন। এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন-কক্সবাজার শহরের বাহারছরার তরতাজা প্রাণ ডালিমকে বাঁচাতে চরমভাবে ব্যর্থ হওয়া কোভিড-১৯ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান উখিয়া SARI আইসোলেশন এন্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টারে চিকিৎসাধীন থাকা মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানীর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।

গত রোববার ৫ জুলাই সন্ধ্যা ৬ টা থেকে তিনি বিরামহীন এ অবস্থান ধর্মঘটে চালিয়ে যাচ্ছেন। অবস্থান ধর্মঘটের দীর্ঘ ১১ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও কোভিড-১৯ ‘পজেটিভ’ রোগী এডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী তখন থেকে কোন দানাপানি মুখে দেননি। কোন প্রয়োজনীয় ও রিগুলার মেডিকেল চেক-আপ করাননি, কোন ওষুধ সেবন করেননি। ফলে তাঁর শারীরিক অবস্থা এখন ক্রমান্বয়ে মুমূর্ষুতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। অথচ ৫ জুলাই পুরো একটি রাত অতিবাহিত হলেও এডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী’র যৌক্তিক দাবি গুলো মেনে নিয়ে ধাম্বিক এনজিও RELIEF এর কোন কর্তা তাঁর অনশন ভাঙ্গানোর তিল পরিমাণ চেষ্টাও করেননি। ফলে সংকট আরো ঘনীভূত হচ্ছে। কোভিড-১৯ রোগী এডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী’র অবস্থাও সংকটাপন্ন করে তুলছে।

কোটি টাকা ব্যয় করে উখিয়া উপজেলার টিএন্ডটি মাঠের দক্ষিণ প্রান্তে জাতিসংঘের অংগ প্রতিষ্ঠান ইউএনএইচসিআর-উখিয়া SARI আইসোলেশন এন্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার টি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অনুরোধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্মাণ করেন। গত ২১ মে হাসপাতালটি কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। ২৭ মে থেকে সেখানে কোভিড-১৯ রোগীদের ভর্তি দেওয়া শুরু হয়। RELIEF নামক ধাম্ভিক এনজিও উখিয়া SARI আইসোলেশন এন্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার টি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে থাকেন।

RELIEF নামক এ এনজিও টা চীনের তৈরী মেয়াদোত্তীর্ণ কিছু ওষুধের নাম, কোম্পানি, তারিখ, মেয়াদের অংশ কেটে ফেলে জোর করে রোগীদের অন্ধকারে রেখে খাওয়াচ্ছেন। যেমন- চীনে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের তৈরি ORS (খাওয়ার স্যালাইন) কৌশলে রোগীদের খাওয়ানো হচ্ছে। RELIEF নামক এ এনজিও টা এভাবে চীনের তৈরী মেয়াদোত্তীর্ণ, নিন্মমানের ওষুধ বাণিজ্যিকভাবে ক্রয় করে উখিয়া SARI আইসোলেশন এন্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টারে ভর্তি থাকা রোগীদের খাওয়াচ্ছেন। কোন রোগী ওষুধের নাম, কোম্পানির নাম, ওষুধের মেয়াদের বিষয় জানতে চাইলে সেসব রোগীদের উপর ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে থাকে বলে অভিযোগ তোলা হয় RELIEF নামক এনজিও টির বিরুদ্ধে। সবকিছুতেই RELIEF নামক এনজিও টি চরম বাণিজ্যিকতার চেষ্টা করে থাকে।

জানা গেছে, বিশিষ্ট গণমাধ্যমকর্মী মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী’কে নিয়মিত প্রদত্ত সেফিরক্সিম ১ গ্রাম নামক ইনজেকশনটি ৪ জুন সকাল ৯ টার দিকে দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ইনজেকশনটি চিকিৎসক, ওয়ার্ডবয়, নার্সেরা অবহেলা করে তাঁকে আর সকালে দেননি। ফলে তাঁর রোগ বেড়ে যেতে থাকে। কিন্ত শনিবার সকালের ইনজেকশনটি দিতে দিতে কেন বিকেল পর্যন্ত সময় গড়াল এড. মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী’কে তার উত্তর এখনো প্রদান করা হয়নি, তা জানতে চাইলে RELIEF নামক এনজিও-র মাস্তান প্রকৃতির ‘সাজু’ নামক বেতনধারী কর্মীর নেতৃত্বে ৫/৬ মাস্তান রোববার ৫ জুন তাঁর উপর মারমুখী হয়ে মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানীর দিকে তেড়ে আসে। তার প্রতিবাদে গণমাধ্যমকর্মী এড. মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী তাৎক্ষণিকভাবে নিজ D#2 নম্বর বেডে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে দেন।

এদিকে, RELIEF নামক দুর্নীতিবাজ ও ধাম্বিক এনজিও কোভিড-১৯ রোগীদের জীবন নিয়ে প্রতারণা করার বিষয়ে উখিয়ার ইউএনও মোঃ নিকারুজ্জামান’কে বিস্তারিত অভিযোগ করা হয়েছে বলে, জানা গেছে।

এছাড়া, SARI আইসোলেশন সেন্টার এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা RELIEF নামক এনজিও’র প্রধান সমন্বয়কারী কাজি হায়দার থেকে এডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানীর চলমান চিকিৎসার বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল জানতে চাইলে তিনি এসব বিষয়ে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

এডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী’র চিকিৎসার বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, এসএসসি ৮৪ ব্যাচ এসোসিয়েশন সহ অনেক সংগঠন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁরা এডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী’র চিকিৎসার বিষয়ে সময় থাকতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, এডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী শুধু একজন গণমাধ্যমকর্মী কিংবা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী নন, তিনি বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন কক্সবাজার জেলাবাসীর একজন অমূল্য সম্পদ। গত ৪ মাস ধরে কোভিড-১৯ নিয়ে তাঁর ভূমিকা ছিলো খুবই প্রশংসনীয় ও উৎসাহব্যাঞ্জক।