সিবিএন ডেস্ক:
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের থাকা-খাওয়ার বিষয়ে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, ‘ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকদের থাকা-খাওয়ার বিষয় নিয়ে যে কথা হয়েছে আমি খোঁজ নিয়েছি। কাল রাতে আমি এটা দেখেছি। ৫০টি হোটেল ভাড়া হয়েছে। সেখানে তিন হাজার ৭শ’ মানুষ এক মাস থেকেছেন। প্রত্যেকটি রুমের ভাড়া ১১০০ টাকা। খাওয়ার খরচ যেটা বলা হয়েছে তা টোটালি রং। সেখানে দিনের তিনটি মিলের জন্য ৫০০ টাকা খরচ হয়েছে।’
মঙ্গলবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে আইন মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাঁটাই প্রস্তাবে সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদের বৈঠকে এ সময় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। ছাঁটাই প্রস্তাব নিষ্পত্তি শেষে মঙ্গলবার ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে জাতীয় পার্টির এমপি পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ডাক্তারদের খাবার বিল নিয়ে সংসদে কথা বলেছেন। সেখানে একটি কলার দাম দুই হাজার টাকা, একটি ডিমের দাম এক হাজার টাকা। একটি ব্রেডের এক স্লাইসের দাম তিন হাজার টাকা, দুই স্লাইস ছয় হাজার টাকা। করোনাকালেও স্বাস্থ্য খাতে এ অবস্থা।’
জিম্বাবুয়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পিপিই ও কিট কেনায় দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘করোনাকালে এসে আমাদের এই রুগ্ন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুরবস্থা। মানুষ বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নাকি মীনা কার্টুনে পরিণত হয়েছে। মীনা কার্টুনের টিয়া পাখি (মিঠু) দিয়ে চলছে এই মন্ত্রণালয়।’
পীর ফজলুর রহমান বলেন, এলাকায় গেলে মানুষেরা আমাকে অনুরোধ করেন আমি যেন সংসদে গিয়ে বলি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অন্য কোনও দায়িত্ব দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়টাকে সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করতে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে মানুষের এই কথাটা নিবেদন করলাম।’
প্রসঙ্গত, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের খাওয়ার খরচ ২০ কোটি টাকা- এমন একটি খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সোমবার (২৯ জুন) বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের খাবারের বিল নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এক মাসের খাবারের বিল ২০ কোটি টাকা এসেছে শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি শিগগির এ ঘটনা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এক মাসে ২০ কোটি টাকা খাবারের বিল, এটি অস্বাভাবিকই মনে হচ্ছে। এটি আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। এত অস্বাভাবিক কেন হবে? যদি কোনও অনিয়ম হয়, অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
এই অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানাতে বুধবার (১ জুলাই) সংবাদ সম্মেলন করবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। আমরা মনে করছি বিষয়টা সবাইকে পরিষ্কারভাবে জানানো দরকার। তাই আমরা ব্রিফিং করবো।’
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।