বার্তা পরিবেশক:
চাষাদের কাছে চাঁদা দাবির প্রতিবাদ করায় মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়ায় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হুমকি জিম্মি হয়ে পড়েছে এক আওয়ামী লীগ নেতার পরিবার। সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র পাহারা এবং হুমকির কারণে ওই আওয়ামী লীগ নেতা ও তার পরিবারের লোকজন এক সপ্তাহ ধরে ঘরবন্দি হয়ে আছে। ঘরের চারপাশে অস্ত্র নিয়ে পাহারা দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। কালারমারছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ড শাখা সভাপতি দিল মোহাম্মদ এই অভিযোগ করেছেন।

তিনি জানান, এসপিএম প্রকল্পের জন্য স্বল্প সময়ের জন্য কালারমারছড়ার সোনারপাড়ায় কিছু জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ওই অধিগ্রহণের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ড শাখা সভাপতি দিল মোহাম্মদ ও ভাইদের জমিও অধিগ্রহণে আওতায় পড়ে। কিন্তু এলএ শাখার কতিপয় কর্মকর্তার সাথে যোগসাজস করে স্থানীয় নূরুল ইসলাম বাহাদুর ও আবু বকরসহ একটি সিন্ডিকেট গোপনে দীল মোহাম্মদ ও ভাইদের অধিগ্রহণের টাকা তুলে আত্মসাৎ করে। এই নিয়ে বহু বিচার-শালিস হলেও বিষয়টি এখনো মীমাংস হয়নি।

দীল মোহাম্মদ অভিযোগ করেন, নির্দিষ্ট সময়ের পর উন্নয়ন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জমিগুলো ছেড়ে দেয়। ছেড়ে দিলে দীল মোহাম্মদ ও ভাইয়েরা জমি ভোগ দখলে শুরু করে। তারা জমিগুলো বর্গচাষ দিয়েছেন। টাকা আত্মসাৎ করার এবার ওই জমিগুলোর উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে প্রতারক চক্রের। তারা জমিগুলো দখল করতে ব্যর্থ হয়ে এবার স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়েছেন। দিল মোহাম্মদের অভিযোগ মতে, নূরুল ইসলাম বাহাদুরসহ প্রতারক সিন্ডিকেটের ইন্ধনে স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী মৃত বদর উদ্দীনের পুত্র জাফর আলম, মৃত আবুল শামার পুত্র ছৈয়দ নূর, আহমদুল্লাহ মাস্টারের পুত্র আনচারুল করিম, কবির আহমদের পুত্র মোঃ ফোরকান সহ একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। ওই সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত দিল মোহাম্মদদের জমির বর্গাচাষাদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন দিল মোহাম্মদের পরিবার।

এর মধ্যে গত ২৬ মে দেখভালের করার জন্য দিল মোহাম্মদের ভাই শহীদুল্লাহ জমিতে গেলে তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী জাফর আলম, ছৈয়দ নূর, আনচারুল করিম, আবু বক্কর ছিদ্দিক, মোঃ ফোরকানসহ ১৫/২০জন সন্ত্রাসী ওই জমিতে যান। অস্ত্র সজ্জিত সন্ত্রাসীদের দেখে যাওয়ার শহীদুল্লাহ পালিয়ে পাশের এক বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে জানে রক্ষা পায়। এ সময় দিল মোহাম্মদসহ ৩/৪ জনকে দেশিয় অস্ত্রদারা আহত করা হয়। এ সময় পুলিশ গিয়ে শহীদুল্লাহকে উদ্ধার করেন। এসময় সন্ত্রাসীরা ওই জমিতে তান্ডব চালায়। এরপরও তারা ক্ষান্ত না হয়ে উল্টে হামলা-মামলা এবং মামলায় আসামী করার হুমকি দিয়ে নিরীহ লোকজন থেকে চাঁদা দাবি করছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী দিল মোহাম্মদ বলেন, আমরা এখনো কেমন দেশে বাস করছি যেখানে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ঘুরাফেরা এবং একটি পরিবারকে ঘরবন্দি করে রাখে? সন্ত্রাসীদের কাছে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এদিকে এই অমনাবিক ঘটনা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন কালারমারছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। কালারমারছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি বশির আহমদ মেম্বার, ৭ন ওয়ার্ড সভাপতি রশিদ আহমদ মেম্বার, ৩নং ওয়ার্ড সভাপতি নুরুল ইসলাম, ২নং ওয়ার্ড সভাপতি মনির আলম, ৬নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক রমিজ আহমদ, ৭নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক নূরুল আলম টিপু, ৯নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক ডা. আহমদ উল্লাহ ও ৫নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক রমিজ আহমদসহ নেতৃবৃন্দ এক আওয়ামী লীগ নেতার পরিবারকে এভাবে সশস্ত্র বন্দী রাখার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ করেছেন। এই ঘটনার দ্রæত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা আহŸান জানিয়েছেন।