আহমেদ সৈকত
মানুষ ঠকে শেখে আর দেখে শেখে , তোমরা যারা ভাল করতে পারোনি দেখো তোমরা ঠকেছো , তার মানে তোমাদের জীবন কিন্তু এখন শুরূই হয়নি । আমাদের একটা মজ্জাগত সমস্যা হলো আমাদের কাছে সবকিছূ শুরূ হবার আগেই শেষ হয়ে যায় ! এই তুমি এ খারাপ করেছো তোমার জীবন শেষ এখন তুমি কারখানায় যাও, বিদেশে কাজ করতে যাও ,কিংবা মেয়ে হলে বিয়ে দিয়ে দিব ! আমরা খূব দ্রুত সফলতা আশা করি । এ কথা নিসন্দেহে সত্য যে ,যেটা তাড়াতাড়ি তৈরী হয় ,সেটা তাড়াতাড়ি ভেঙ্গে ও যায় , ১৬ , ১৭ বছর না ১৮ ও মানুষের জীবনের শেষ না , মানুষ যেকোন সময় তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে । বলা হয়ে থাকে , জীবনটা সাপ লুডু খেলোর মতো , এখানে কেউ একটি ভুল সিদ্ধান্ত নিলে সাপের মুখে পড়ে সাপের লেজে চলে এসে পারি ,আবার কেউ একটি মই এ উঠতে পারলে এক দৌড়ে অনেক খানি সামনে ! তার মানে সবকিছুতে কেমন যেন নিয়তি ,ভাগ্য মেনে নেই আমরা সবাই । কিছু বিষয় আমাদের হাতে থাকে না , যেমন আমাদের পুরো জীবন পরিচয় যেকোন পরিবারে নিজেকে আবদ্ধ করতে পারি না । ইচ্ছে হলেই আমরা উন্নত কোন দেশের নাগরিকের সন্তান হিসাবে জন্ম নিতে পারি না , এ মানবজন্ম পেয়েছি অনেক সাধনার পরে । এটিকে কাজে লাগাতে হবে সুকৌশলে । অন্যেরে সাথে নিজেদের অবস্থান তুলনা করা যাবে না । ।আমরা সবাই সেরা , কেউ কারো থেকে কোন অংশে কম না । আসলে ভাল ভাল সুন্দর সুন্দর উপদেশ দেয়া খূব সহজ সেটা বাস্তব প্রয়োগ করাটা কঠিন । তোমরা যখন ফলাফল মতো করতে পারো , তোমাদের থেকে বেশি বিব্রত কর অবস্থায় আছেন তোমাদের বাবা মা , ভাই বোন যারা তোমাকে সবচে বেশি যত্ন করবে , করেন । খুব স্বাভাবিক কারণে কিছু আত্নীয় স্বজন ফলাফল খারাপ জানার পরেও বার বার জানতে চায় , আমাদের মানব প্রকৃতি নেতিবাচক একটা দিক হলো আমরা অধিকাংশ সময় মানুষের বাজে ,বিব্রতকর পরিস্থিতির কথা শোনতে চায় .আমরা সুখে থাকব বাকিরা সবাই দৌড়ের ওপর থাক , বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচটা বছর কূটনীতি নিয়ে পড়ার সুবাদে মানব মনের এ সব বিষয় গুলো্ সবিশেষ জানাশোনা আছে , সন্দেহবাদী ,অন্যেরা সবাই মারা যাক আমি বাঁচি থাকি এ স্বার্র্থ বাদীতা মানবজীবনের সবচে বেশি স্বাভাবিক ম্যাকিয়াভেলীয়ান দৃষ্টি কোণ থেকে এটি সত্য ! আমাদের দেশে আশা করা হয়ে থাকে , প্রতি বছর জিপিএ-৫ এর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়বে , সে জন্যে আমরা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক অবধি ছেলে মেয়েদের ভয়ানক চাপের মাঝে রাখি , সন্তানদের অনেক গুলো প্রাইভেট পড়াই , নিজেদের সকল সন্ঞয় তাদের জন্যে ব্যয় করার পর ভাবি তারা ভাল করবে , দেখুন প্রতি বছর লাখ লাখ ছেলে মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করছে , তাদের কত জনের জন্যে আমরা সুযোগ করে দিগতে পারছি ? আমাদের দেশে যে অনার্র্স সেই মাসটার্স ! উন্নত দেশগুলোতে শতকরা ৩০ ভাগ মানুষ স্নাতকোওর পড়ে , বাকিরা কারিগরী ও ফ্রিল্যান্সিং করে ,আমাদের দেশে কোন ছেলে মেয়ে প্রথাগত ভাবে না যেযে এমন কিছু করতে গেলে ভয়ানক সমালোচনা ও বাঁধার মুখোমুখি হয় ,একজন শিক্ষারথী বিশ্ববিদ্যালয় শেখে ইংলিশ ,কম্পিউটার সাক্ষরতা ও অন্যান্য যোগাযেগের দক্ষতায় দক্ষ হয়না । প্রতিষ্ঠান গুলো কেবল ছাড়পএই সরবরাহ করছে , মাধ্যমিক ধাপে কোন ছেলে মেয়ে এসব বাস্তবতার গল্প শোনাতে খারাপ লাগে, আমরা নিজেদের হতাশা তাদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছি ভূল সব নীতি প্রণযনের মাধ্যরে ,বিশেষ করে শিক্ষা ব্যবস্থায় ! গেটস ,জোকারবারগরা কেউ বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করতে পারেনি , কিন্তু সেসব প্রতিষ্ঠান গুলো পরে তাদের স্বূীকৃতি দিয়েছে , তারা প্রাতিষ্ঠানিক যাতাকল থেকে বের হয়ে নিজেদের মতো সব কাজ করছে ,আমরা আমাদের তরুণদের শিখিয়েছি,জীবনে সফল মানে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবেই কেবল সফলতা পাওয়া যায় । বাস্তবতা একটু ভিন্ন , প্রতিষ্ঠানগুলো আসলে ছাড়পএ দেবার জন্যেই , কারো প্রকৃত সৃজনশীলতাকে স্বীকৃতি দেবার জন্যে না । এ বিষয়গুলো আজ আমাদের কাছে সুস্পষ্ট , কাজেই হে নবীন , তুমি দেখিয়ে দিবে তোমাকে ভিন্ণভাবে …
লেখক : স্নাতকোওর গবেষক, আন্তর্র্জাতিক সর্ম্পক বিভাগ , চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় , আজীবন সদস্য , কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমী , 01838288956, saikatcuir93@gmail.com
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।