আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে জারিকৃত লকডাউনের মেয়াদ পঞ্চম দফায় আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে করোনায় মৃত্যুতে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষ স্থানে থাকা ভারত। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ছাড়া অন্যান্য স্থানে শপিংমল, রেস্টুরেন্ট এবং উপাসনালয় আগামী ৮ জুন থেকে খোলার অনুমতি দিয়েছে দেশটির সরকার।

দেশটিতে চতুর্থ দফায় বাড়ানো লকডাউনের মেয়াদ শনিবার (৩০ মে) থেকে শেষ হওয়ার কথা ছিল। সেদিনই দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার পঞ্চম দফায় আরও এক মাস লকডাউন বৃদ্ধির ঘোষণা দিলো।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিনেমা হল, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ও মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে বিভিন্ন এলাকাকে কয়েক ক্যাটেগরিতে ভাগ করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে রেড জোন এলাকাগুলোতে বিধি-নিষেধে আরও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া কমঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সেখানে সবকিছু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করার কথা জানানো হয়েছে।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চতুর্থ দফার লকডাউনে রাত্রিকালীন কারফিউ সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত কার্যকর থাকলেও এবারে তা রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। তবে মানুষের রাজ্য ও আন্তঃরাজ্য চলাচল এবং পণ্য পরিবহনে কেন্দ্রীয় কোনও বিধি-নিষেধ থাকবে না। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারগুলো পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেবে।

রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর সঙ্গে ব্যাপক আলোচনার ভিত্তিতে লকডাউন বৃদ্ধি এবং বিধি-নিষেধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এ ধাপের লকডাউনের উদ্দেশ্য হলো সবকিছু পুনরায় খুলে দেয়া। তবে এর কেন্দ্রে থাকবে অর্থনীতির চাকা সচল করা।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে তৈরিকৃত নতুন করোনা গাইডলাইনে বলা হয়েছে, সংক্রমিত এলাকাগুলোর বাইরে আগে থেকে বন্ধ থাকা সব ধরনের কার্যক্রম এবার চালু করা যাবে। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালুর ব্যাপারে সব রাজ্য এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী জুলাইয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট, মেট্রো, সিনেমা হল, জিমনেশিয়াম, সুইমিং পুল, বিনোদন উদ্যান, থিয়েটার এবং বারগুলো আরও পর্যালোচনা এবং আলোচনার পর খুলে দেয়ার অনুমতি দেয়া হবে।

করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকায় দেশটিতে সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং অন্যান্য জনসমাগমপূর্ণ অনুষ্ঠান আগের মতোই নিষিদ্ধ থাকবে। লকডাউনের এই সময়ে সংক্রমিত এলাকায় জরুরি কার্যক্রমের অনুমতি মিলবে।

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে গত ২৫ মার্চ কঠোর লকডাউনে যায় ভারত। প্রথম লকডাউন আরোপের পর এ নিয়ে চারবারের মতো মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলো। প্রতিবেশি চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক লাখ ৭০ হাজার। মারা গেছেন প্রায় ৫ হাজার মানুষ।