প্রতীকী ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক,চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের পুর্ব সুরাজপুরস্থ শাহ আজমত উল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি জবরদখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার সকালে বিদ্যালয়ের দাতাপক্ষের লোকজনের দলবদ্ধ হয়ে লকডাউন সময়ে সরকারি ছুটির সুযোগে বিদ্যালয়ের বেশ কিছু জমি দখলে নিয়েছে। ঘটনাটি জানতে পেরে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ছুঁটে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের দখলচেষ্টা থেকে বিরত থাকতে বারণ করেছেন। এরপর তাঁরা দখলচেষ্টা অব্যাহত রাখে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদিন ।
অবশ্য বিদ্যালয়ের জায়গা দখল চেষ্টার ঘটনায় ইতোপুর্বে পাঁচমাস আগে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদিন এবং প্রধান শিক্ষক হাসান মুরাদ চকরিয়ার ইউএনও কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু অভিযোগটির আলোকে গেল পাঁচমাস ধরে প্রশাসনের পক্ষথেকে সরকারি বিদ্যালয়ের সম্পদ রক্ষার্থে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় সর্বশেষ শুক্রবার ২২ মে সকালে দাতাপক্ষের লোকজনের দলবদ্ধ হয়ে লকডাউন সময়ে সরকারি ছুটির সুযোগে বিদ্যালয়ের বেশ কিছু জমি দখলে নিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকার লোকজনের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
বিদ্যালয়ের জায়গা জবরদখলের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে পরিষদের স্থানীয় সদস্য (মেম্বার) নুরুল আমিন। তিনি বলেন, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদিন ঘটনাটি আমাকে জানালে তাৎক্ষনিক আমি ঘটনাস্থলে যাই। পরবর্তীতে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিমকে অবগত করি। এরপর চেয়ারম্যানের নির্দেশে বিদ্যালয়ের জমিতে কোন ধরণের স্থাপনা নির্মাণ না করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিই।
শাহ আজমত উল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদিন বলেন, আমাদের বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এলাকার এক প্রবীণ মুরব্বী কবির আহমদ বিদ্যালয়ের নামে সরকারকে ৩০ শতক বা ৯০ কড়া জমি দান করেন। পরবর্তীতে ওই জমিতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু জমিদাতা মুরব্বী কবির আহমদ মারা গেলে সম্প্রতি বছর আগে থেকে তাঁর পরিবার সদস্যরা নানাভাবে দানকৃত বিদ্যালয়ের জমি ফের দখলে নেয়ার অপচেষ্টায় মেতে উঠে।
এ ঘটনায় ইতোপুর্বে পাঁচমাস আগে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষথেকে চকরিয়ার ইউএনও কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। ওইসময় অভিযোগটি তদন্তের জন্য সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেয়া হলেও পরবর্তী সময় পাঁচমাস ধরে বিদ্যালয়ের সম্পদ রক্ষায় কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির (এসএমসি) সভাপতি জয়নাল আবেদিন অভিযোগ তুলেছেন, করোনা সংক্রমণে লকডাউন সময়ে সরকারি ছুটির সুযোগে সর্বশেষ শুক্রবার ২২ মে সকালে দাতার ছেলে ফরিদুল আলম ও তাঁর ভাই জসিম উদ্দিনসহ তাদের লোকজনের দলবদ্ধ হয়ে বিদ্যালয়ের বেশ কিছু জমি দখলে নিয়েছে।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে তাৎক্ষনিক চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ সামসুল তাবরীজ এবং উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার আবু জাফরকে অবহিত করা হয়। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে স্থানীয় সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিমের হস্তক্ষেপে বিদ্যালয়ের জমি দখলচেষ্টা বন্ধ করা হয়।
এব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের জমির বিরোধের ঘটনাটি অনেকদিন আগের। এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের পক্ষথেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে আগে থেকে লিখিত অভিযোগ আছে।
তিনি বলেন, নতুন করে বিদ্যালয়ের জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ সর্ম্পকে সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় আপাতত সেখানে সবধরণের স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। ঈদুল ফিতর শেষে জমি পরিমাপের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাতে দুইটি পক্ষই রাজি হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্তরা সিবিএনকে জানান , স্কুলে দানকৃত জমি স্কুলের দখলে আছে । আমরা আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তির উপর কাজ করছি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।