প্রেস বিজ্ঞপ্তি :

বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে নভেল করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় দেশে দেশে চলছে লকডাউন। ফলে বাংলাদেশের ঘর থেকে বের হতে পারছেন না শ্রমজীবী মানুষজন। কাজ-কর্ম বন্ধ থাকায় অসহায়ত্ব জীবন-যাপন করছে এসব মানুষ। একদিকে লকডাউন, অন্যদিকে জীবন। এই দুইয়ের মাঝে পড়ে সবচেয়ে বিপাকে রয়েছেন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষজন। তাঁরা না পারেন কাজে যেতে, না পারেন কারো কাছে হাত পাততে। এসব অসহায় মানুষের জীবনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে পরিবেশবাদী যুব সংগঠন “গ্রীন ভয়েস”।
সরকারি নির্দেশনা মেনে নিজ অর্থায়নে অসহায় মানুষদের খুঁজে খুঁজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন গ্রীন ভয়েসের সবুজ বন্ধুরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ভালোবাসার টানে নিস্বার্থভাবে এসব কাজ করছেন তাঁরা। সংগঠনটির পক্ষ থেকে দেশের ৪০টি জেলায় ১৮ শতাধিক পরিবারের মাঝে ঈদের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। আজ (শুক্রবার) কক্সবাজার জেলার কয়েএকটা উপজেলায় ২০টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা ও ১২০ জনকে ইফতার বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় তাদের ৪র্থ দফায় খাদ্যসামগ্রী ও ঈদ উপহার বিতরণ। এই দফায় সেসকল গরীব দিনমজুর পরিবারকে সহায়তা করা হয়েছে যারা একদিন ইনকাম না করলে সংসার চালাতে পারেনা। দিনমজুর পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, এলাকায় লকডাউন এর কারণে কাজ বন্ধ থাকায় তাদের আয় উপার্জন বন্ধ, তাই নিজেদের চলতে সমস্যা হচ্ছে। এই অবস্থায় পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। তারা কারো কাছে কিছু চাইতে পারে নাই।

গ্রীন ভয়েস কক্সবাজার জেলা শাখার সমন্বয়ক মুহাম্মদ জাবেদুল আনোয়ার বলেন, যখন খাবার নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে যাই তখন তাদের মুখের হাসি দেখে নিজের চোখে পানি চলে আসে। মনের মাঝে “গ্রীন ভয়েস” এর প্রতি ভালোবাসা বেড়ে যায়, ইচ্ছে হয় এভাবে যেন সারাজীবন অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পারি। এই সময় তিনি সমাজের বৃত্তবান লোকদের কে এই মানবিক কাজে এগিয়ে আসার জন্য আহবান জানান।

সহ-সমন্নয়ক সাহেদুল ইসলাম জানান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে যখন ত্রাণ তুলে দিচ্ছিলাম তখন কেউ কেউ কেঁদে পর্যন্ত ফেলছিল। কতটা অসহায় হলে মানুষ কেঁদে ফেলে তা বলার ভাষা নেই আমার। ত্রাণ পেয়ে তারা বেশ খুশি হয়েছে। এই ভালোলাগার অনুভুতি ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। ধন্যবাদ “গ্রীন ভয়েস”কে এমন মহৎ কাজের অংশীদার করার জন্য।

গ্রীন ভয়েস এর প্রধান সমন্বয়ক আলমগীর কবির জানান, গ্রীন ভয়েস শুধু একটি পরিবেশবাদী যুব সংগঠনই নয়। পরিবেশ সচেতনতার পাশাপাশি আমরা চেষ্টা করি যেকোন দূর্যোগ বা মহামারী পরিস্থিতে অসহায়-গরীব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে দেশজুড়ে চলা লকডাউনে আঁটকে পড়া অসহায় মানুষদের ঘরে গ্রীন ভয়েস এর পক্ষ থেকে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করেছি।
তিনি বলেন,মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে খাদ্য। খাবার না খেয়ে কোন জীবকুলের পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব না। সুস্থ ও সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে চাই সুষম ও পর্যাপ্ত খাবার। এসব মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে পারার মধ্যে স্বার্থকতা খুজে পাই। সমাজের কিছু বিত্তবান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় আমরা এই কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। এখন পর্যন্ত সারাদেশের ৪০ জেলায় ১৮০০ পরিবারকে ঈদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।