মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া:
চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীতে বোনের ক্রয়কৃত জায়গা দখল না দিয়ে উল্টো চলাচল পথ বন্ধ করে বোনকে কুপিয়েছে আপন ভাই। এমন এক ঘটনায় গুরুতর আহত রহিমা খাতুন (৬১) নামের এক মহিলা ও তার দুই ছেলেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ষাটোর্ধ ওই নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খুটাখালী ইউনিয়নস্থ উত্তর মেধাকচ্ছপিয়া নামক এলাকায় এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন সকালে বর্নিত এলাকার মোহাম্মদ হোছনের স্ত্রী রহিমা খাতুন বাড়ির চলাচল পথ দিয়ে বের হলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দলবল নিয়ে হামলা চালায় ভাই মুছা আলী। প্রথমে দা, ছুরি, লোহার রডসহ দেশীয় তৈরি অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বোনকে মেরে ফেলতে পথে উৎপেতে থাকে। সুযোগ বোজে চলাচল তাকে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। শোর চিৎকার শুনে মা’কে উদ্ধার করতে দুই ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৩০) ও হেলাল উদ্দিন (২৮) এগিয়ে আসলে তাদেরকেও গুরুতর আহত করে। পরে এলাকার লোকজন উদ্ধার করে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। দায়ের কুপাঘাতে রহিমা খাতুনের উপরের চোয়াল কেটে গিয়ে দুটি দাঁত বিচ্ছিন্ন হয় এবং পেট ও হাতে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এসময় মাকে উদ্ধার করতে আসা দুই সন্তানও গুরুতর আহত করেছে বলে অভিযোগে জানা যায়।
ঘটনা সুত্রে জানা গেছে, বর্নিত এলাকার মোহাম্মদ হোছনের স্ত্রী রহিমা খাতুন আপন ভাই ও বোনের ওয়ারিশ থেকে কয়েক দফায় বিএস-২০ খতিয়ানের ১১০১ নং দাগের ২৯ কড়া জমি ক্রয় করেন। তৎমধ্যে ২৫ জুলাই ২০১৬ ইং তারিখে মা মৃত জরিনা খাতুন কবলা দেন ৯ (৩.০৪ শতক), ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ইং তারিখে ৬ কড়া (২ শতক) ক্রয় করেন ভাই মোঃ হোছেন থেকে, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২০ ইং তারিখে বোন মৃত গোলছার খাতুনের ওয়ারিশদের থেকে কবলা নেন ৪ কড়া (১.৩৪ শতক)। ক্রয় করা জায়গাগুলো দখল বুঝিয়ে দিবে বলে প্রথমে স্বীকার করলেও পরে অপারগতা জানিয়ে বিরোধ শুরু করে দেয় দুই ভাই মুছা আলী ও মোঃ হোছন। তারা জায়গা দখল না দিয়ে উল্টো বোনকে হত্যা করে সম্পত্তি আগলে রাখার পায়তারা চালাচ্ছে বলে জানায় ভুক্তভোগীরা। এমনকি বোন রহিমা খাতুনের নিজস্ব চলাচল পথের উপর ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছে তারা।
বিরোধীয় এ বিষয় নিষ্পত্তি করতে গত ১৩ জানুয়ারী ২০২০ ইং তারিখ স্থানীয় মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে সালিশ বৈঠক বসে। কাগজপত্র সাক্ষী প্রমাণ যাচাই করে তারা রায় প্রদান করে। কিন্তু মুছা আলী ও মোঃ হোছন সামাজিক এ রায় মানতে রাজি হয়নি বলে জানা যায়। অপরদিকে সেই চলাচল পথে ঘর নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখে। এনিয়ে গত ৩ এপ্রিল ২০২০ ইং তারিখ চকরিয়া থানায় একখানা অভিযোগ দায়ের করে। করোনা মহামারির পরে বিস্তারিত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবেন জানিয়ে থানা পুলিশ নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু পুলিশের নির্দেশনা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অদৃশ্য শক্তির জোরে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। শুধু তাই নয় রহিমা খাতুন ও তার পরিবারকে নিপাত করে উল্টো মামলা দিয়ে জেলের ভাত খাওয়াবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মিথ্যা আজে বাজে কথা লিখে এবং ছেলে গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নামে আন্দাজে কথাবার্তা অনলাইনে প্রকাশ করছে। এতে সাধারণ মানুষের কাছে প্রশাসনের মান চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে।
এব্যপারে খুটাখালী ইউনিয়নের মেম্বার সেলিম উল্লাহ জানান, হামলার ব্যাপারে শুনেছি। এর আগেও উভয়ের বিরোধ নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তারা মানতে রাজি হয়নি।
চকরিয়া থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, খুটাখালীর এরকম কোন ঘটনার অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।