মুহম্মদ হেলাল উদ্দীন

মহেশখালীতে লগডাউন হয়েছে,লকডাউন হয়নি।যেটা করা উচিত সেটা নিজেরাতো করেইনি,অন্যদেরও করতে বাধ্য করেনি।সঠিকটি করার কার্যকর কোন কিছুর চেষ্টাই করা হয়নি।ফেসবুকেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে,বেশিরভাগ সময়ই।

অসত্য,অযৌক্তিক,দায়িত্বজ্ঞানহীন,আনাড়ি সমালোচনা করা হয়েছে।অথচ,শুদ্ধটা করার জন্য উপযুক্ত জায়গায় আঘাত করা নাগরিক হিসেবে ফরজ ছিল।নাগরিক হলে সেটাই করে,জনগণ না।এখানেই পার্থক্য।

এখানে দায়িত্বটা সবার।সরকারি নির্দেশনা মতে, করোনা প্রতিরোধে উপজেলা,ইউনিয়ন,ওয়ার্ড কমিটি থাকার কথা।এ কমিটির কার্যপরিধিও ঠিক করা আছে।নাগরিক হিসেবে সব সমালোচনা ফেসবুকে প্রসব করলে দায়িত্ব পালন সম্পন্ন হয় না,সম্পূর্ণ হয়।

নাগরিকের দায়িত্বই বেশি। এ রাষ্ট্রের মালিক রাষ্ট্রের নাগরিকই।নাগরিক কারা সে প্রশ্ন করতে আসলেই বিপদ। রাষ্ট্রের আদেশ অমান্য করে অন্য এলাকায় যাওয়া, অন্য এলাকা থেকে রাষ্ট্রের নির্দেশ অমান্য করে এখানে যারা প্রবেশ করেছে, প্রবেশে করতে রাষ্ট্রের আদেশ পালন না করে যারা প্রবেশকারীদের সহযোগীতা করেছে,তথ্য গোপনকারী,সার্বিক ব্যবস্হপনায় দায়িত্ব পালনে অবহেলাকারী আর অযোগ্যরা সবাই নাগরিক।

বিকল্প ব্যবস্হাপনা না করে,পান বাজার বন্ধ করা হল।দীর্ঘযুগ ধরে একটি বাজারের উপর নির্ভরশীল মানুষদের জন্য বিকল্প চিন্তা মাথায় দিলেন না।সে বাজারে গিয়েই রমজানের বাজার করে মৃত্যু ত্বরান্বিত করতে হবে আপনাদের।আমি মহেশখালীর প্রত্যেকটা পাড়া মহল্লা চিনি।এমন কোন গ্রাম নেই যেখানে আপনার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পাবেন না।হয়ত কারো একটু কাছে,কারো একটু দূরে।হতে পারে এখানে খুব উচ্চ মর্গীয় সদাই করা যাবে না।কিন্তু,বেঁচে থাকার জিনিস গুলো পাওয়া যাবে।সম্ভবত এ ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করা হয়নি।সচেতন করা বা বিকল্প ব্যবস্হা মানুষের মগজে দেয়া দরকার ছিল। নিজেদেরও দায়িত্ব ছিল সচেতন হওয়ার।যদি তাই হতো,এভাবে হাজার মানুষের সমাবেশ হতো না।বরযাত্রী কমিউনিটি সেন্টারের গেইটে উপস্হিত হওয়ার পর বিয়ে বন্ধ করা হলে সংঘাত হবেই।তখন মানুষের পেটে ক্ষুধা থাকে,মানসিক একটা প্রস্তুতিও থাকে।আবার,কম খেলে মরার ইতিহাসও এ জগতে নাই। এখন ভোজন বিলাসিতার সময় নয়,বেঁচে থাকার সময়।

পাড়ায় পাড়ায় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী করে নির্দিষ্ট লোকজন দিয়েই পুরো পাড়ার বাজার সদাইসহ সব প্রয়োজনীয় কাজই করা যেত।এ কাজের জন্য কয়েকশ তরুন মুখিয়ে আছে স্বেচ্ছাশ্রম দেয়ার জন্য।উদ্যোগ নিলেই হতো।

দায়িত্বপ্রাপ্তরা তাদের দায়িত্ব ঠিকমত পালন করছে কিনা তা দেখা,না করলে তাদের দিয়ে করিয়ে আপনার অধিকার আদায় করে নেয়া আপনারই কাজ।এখানে কেউ আপনার অধিকার আপনাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দিবে না।এটা টোটাল ব্যস্হার গলদ।কেন জানেন(?),আপনি আপনার পাওনাটা পাওয়ার পর পাওনাদারকে ধন্যবাদ দেন,পুলিশ আসামী ধরলে খুশিতে টগবগ করেন।অথচ এটা স্বাভাবিক কার্যক্রমই।

একইদিনে নিজের পাড়াতেই দু’জন করোনারোগী শনাক্ত হয়েছে।আরো চারজন পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যেই।এরপর আর চার কিলোমিটার পরেই আছে আরো।বিষাদে ভরে গেছে মনটা।নিজেরাই কার্যকর উদ্যোগ নেন,নিজেদের প্রয়োজনেই।সেটা অবশ্যই রাষ্ট্রের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে।রাষ্ট্রের আদেশ পালন করুন।
বাড়িতে থাকুন,নিরাপদ থাকুন।

লেখক: ওসি (তদন্ত) বোয়ালখালী ও মহেশখালীর বাসন্দিা।
-ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেয়া।