শাহেদ মিজান, সিবিএন:

চট্টগ্রাম, খুটাখালী ও কক্সবাজার শহরের তিন বাড়িতেই উঠেছিলো কক্সবাজারের প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী মুসলিমা খাতুন (৭০)। তিনি সৌদিআরব থেকে ওমরা হজ্ব শেষে ১৩ মার্চ প্রথম উঠেন তাঁর ছোট ছেলের চট্টগ্রামস্থ বাসায়। সেখান থেকে আসেন খুটাখালীর নিজস্ব বাড়িতে। অসুস্থ্য হয়ে পড়লে খুটাখালী থেকে তাকে নিয়ে আসা তাঁর বড় পুত্র কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ সোলাইমানের কক্সবাজারের দক্ষিণ টেকপাড়াস্থ পল্লবী লেইনের বাসায়। পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে খোঁজ নিয়ে এই তথ্য জানা গেছে।

এসব সূত্রে জানা যায়, করোনা আক্রান্ত মোসলিমা খাতুন গত ১৩ মার্চ দেশে ফিরে চট্টগ্রাম শহরের নিউ চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় ছোট সন্তান হারুনের বাসায় অবস্থান করেন। পরদিন ১৪ মার্চ তিনি খুটাখালীর নিজবাড়ীতে ফেরেন। কিন্তু ১৭ মার্চ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কক্সবাজার শহরে আনা হয়। ওইদিন তিনি শহরের টেকপাড়ায় বড় সন্তান, কক্সবাজার সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সোলাইমানের বাসায় ছিলেন। বেশি অসুস্থ্যবোধ করলে ১৮ মার্চ তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওমরা থেকে ফেরায় তিন বাড়িতেই পরিবারের সকল সদস্যসহ অনেক আত্মীয় মোসলিমা খাতুনের সাথে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন। এমনি খুটাখালীর গ্রামের বাড়ি আত্মীয়-স্বজন ছাড়া প্রতিবেশীরাও তার সাথে সাক্ষাৎ করেন।

মোসলিমা খাতুনের করোনা সনাক্ত হওয়ায় তার তার সংস্পর্শে আসার সবাই ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তবে সবাইকে পক্ষকাল পর্যন্ত কোয়েরেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে অধ্যক্ষ সোলাইমানের পরিবারের সদস্যরা হোম কোয়েরেন্টাইনে এবং সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মহিউদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট ডাক্তার ও নার্সসহ অন্যান্যরা কোয়েরেন্টাইনে রয়েছেন। তবে খুটাখালীতে মোসলিমা খাতুনের সংস্পর্শে আসা আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশিরা কোয়ারাইন্টাইনে যায়নি। এমনকি তারা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। কারো বাড়ি লকডাউন করা হয়নি। এতে খুটাখালী দক্ষিণ পাড়ায় এক ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সদর হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. মহিউদ্দিন জানান, গত ১৮ মার্চ মোসলিমা খাতুন (৭০) সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর যেসব ডাক্তার-নার্স তাকে চিকিৎসা দিয়েছেন, তাদের সবাইকে কোয়েরেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। এমনকি তিনি নিজেও কোয়েরেন্টাইনে রয়েছেন বলে জানান।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারের প্রথম করোনা আক্রান্ত চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়ার মরহুম রশীদ আহমদের স্ত্রী এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালউদ্দিন আহমদের মামী।

তিনি গত ১৮ মার্চ থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) থেকে পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর তার শরীরে করোনা ধরা পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।