বিশেষ প্রতিনিধি:

কক্সবাজার উখিয়ার জালিয়াপালংয়ের উত্তর সোনারপাড়া মৃত অাবুল হাসেমের ছেলে নুরুল অাবছার মিয়ানমারের কারাগারে দীর্ঘ ১৫ মাসধরে মানবপাচারের কবলে পড়ে বন্দি জীবন কাটাচ্ছে তবে পাচারকারী বেলাল – অালী অাহমদ ও শুক্কুর সিন্ডিকেটরা রয়েগেছে অধরাই। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে চলছে ব্যাপক জল্পন কল্পনা। অন্যদিকে পরিবারের লোকজন শত চেষ্টা করেও কোনভাবে তাকে মিয়ানমারের কারাগার থেকে ফেরত অানার সুযোগ পাচ্ছে না।

সূত্র জানায়, বহুল অালোচিত উখিয়ার মানবপাচারকারী বেলাল ও অালী অাহমদ এবং শুক্কুর সিন্ডিকেটরা মালেয়শিয়ায় মানবপাচার করে অাসছে বহুদিন ধরে। গত বছর ২০১৯ সালের ৩ জুলাই রাত সাড়ে নয়টার দিকে স্থানীয় উত্তর সোনারপাড়ার মৃত অাবুল হাসেমের ছেলে নুরুল অাবছারকে বহু টাকার বেতনে চাকুরির লোভ দেখিয়ে এক অাদম পাচার চক্রের হাতে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তুলে দেয়। এই সিন্ডিকেট রীতিমতো সাগরপথে মানবপাচার করেন বলেন একাধিক লোকজন জানিয়েছন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সোনারপাড়া এলাকার এক লোক বলেন, উত্তর সোনার পাড়া এলাকার ফরিদের পুত্র বেলাল ও একই এলাকার মৃত রশিদ অাহমদের পুত্র অালী অাহমদ, পশ্চিম সোনার পাড়ার মৃত হোসন অালীর পুত্র অাব্দু শুক্কুর, উত্তর সোনার পাড়ার মীর জাফরের পুত্র অাবু তাহের এরা মানবপাচার করে বহু সময় ধরে। সুযোগ পেলে রেজুখাল ব্রীজ থেকে অনেক লোকজনকে ডিঙি নৌকা করে গভীর সাগরে নোঙর করা জাহাজে তুলে দিয়ে অাসতো। এরা এখন মাঝেমধ্যে মাদক ব্যবসাতে বেশ কারবারি করেতে দেখা যায়।

তিনি অারো বলেন, তবে অামরা শুনেছি মৃত অাবুল হাসেমের পুত্র নুরুল অাবছারকে ওই সিন্ডিকেট মালেয়শিয়ায় পাচার করে দিয়েছিল কিন্ত অামরা পরে জানলাম সে মিয়ানমারের কারাগারে বন্দি রয়েছে। পরে এই ঘটনা জানাজানি হলে পাচারকারী সিন্ডিকেট কৌসলে নুরুল অাবছারের মুক্তির জন্য বিভিন্ন সলা- পরামর্শ দিয়ে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন। কিন্ত তারা মুক্তিপন অাদায় করতে ব্যর্থ হয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করে।

ততক্ষণে অাবছার মিয়ানমারের পাহাড়ে অাটকা পড়ে যায়।
সে সময় দালাল মারফতে নুরুল অাবছার একটি মোবাইল থেকে কল দিয়ে কান্নাকাটি করে তার মাকে বলে কোন রকম ৩ লাখ টাকা সংগ্রহ করে দিয়ে মুক্তিপনটা দেয়ার জন্য জোর অাকুতি জানালে তার মা ওইসব চিহ্নত দালালদের উপর অাস্থা রাখতে পারেনি। এরপরে তার কোন সঠিক সংবাদ পাইনি। তবে কিছুদিন পর জানতে পারে সে মিয়ানমারের কারাগারে অাছেন।

তৎসময়ে ভিকটিম পরিবার এই ঘটনার প্রেক্ষিতে উখিয়া থানা পুলিশের কাছে মামলা রেকর্ড করাতে না পেরে সর্বশেষ তারা মানবপাচার প্রতিরোধ ট্রাইব্যুনাল-৩ কক্সবাজার অাদালতে মামলা দায়ের করেন ভিকটিম নুরুল অাবছারের মা মাবিয়া খাতুন।
যার মামলা নাম্বার ৩০৯/২০১৯

ভিকটিমের অাপন ভাই জালাল বলেন অামার ছোট ভাইকে সোনার পাড়ার ফরিদের পুত্র বেলাল, মৃত রশিদ অাহমদের পুত্র অালী অাহমদ ও মীর জাফরের পুত্র অাবু তাহের এবং হোছন অালীর পুত্র অাব্দু শুক্কুর এই সিন্ডিকেট মিলে মালেয়শিয়ায় পাচার করার সময় মিয়ানমারের উপকূলের পাহাড়ে নিয়ে যায়। পরে তারা অামাদের থেকে মুক্তিপন দাবি করেছিল ৩ লাখ টাকা কিন্ত অামরা দিতে না পেরে তাকে মিয়ানমারের জেলে দিয়ে দেয়। এরপর থেকে অাজ পনের মাস হয়েগেলো সে সেখানকার কারাগারে অাছেন। অামরা কোনভাবে তাকে অানতে পারছি না। যে যেদিকে বলছে সেদিকে যাচ্ছি কিন্ত কোন সুরাহা হচ্ছে না।

তবে অামার মা বাদী হয়ে কক্সবাজার কোর্টে একটি মামালা দায়ের করেছে। সেখানে চিহ্নিত দালাদের নাম উল্লেখ করে মামালা করেছেন তিনি। যেটা এখন সঠিক তদন্তের জন্য কক্সবাজার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিঅাই) কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

জালাল অারো বলেন, অামরা প্রশাসনের প্রতি সঠিক বিচার অাশা করছি। কিভাবে তাকে মিয়ানমারের জেল থেকে মুক্তি পাবে সে বিষয়ে সার্বিক সহযোগীতা কামনা করছি।

এ বিষয়ে মানবপাচারকারী অালী অাহমদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন সেটাতে অামি জড়িত নই।
বিষয়টি জানতে চাইলে উখিয়া থানার ওসি মরজিনা অাখতার মরজু বলেন, ভিকটিম পরিবার অামার কাছে অাসলে অবশ্যই অাইনানুগ ব্যবস্থা নিবো। তবে অামরা মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থানে। অপরাধী কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। সে যেইহোক অপরাধী হলে তাকে অবশ্যই অাইনের অাওতায় অাসতে হবে।