নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার শহরে জোর করে অবৈধভাবে জমি দখল করতে না পারায় ক্ষুব্ধ হয়ে আতাউল্লাহ সিদ্দিকী নামে এক ব্যক্তিকে মিথ্যা ফঁাসিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভূমিদস্যুদের সাথে যোগসাজস করে ওই ব্যক্তি একটি মানবপাচার মামলায় পরিকল্পিতভাবে আসামী করে থেকে থানায় ডেকে এনে গ্রেফতারেরও অভিযোগ করা হয়েছে। গ্রেফতারের তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া আতাউল্লাহ সিদ্দিকীর পিতা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ডা. নুরুল আমিন গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত অভিযোগে ডা. নুরুল আমিন জানান, কক্সবাজার শহরের হোটেল-মোটেল জোনে ছায়েরা খাতুন নামে এক মহিলা মালিকানাধীন ১ একর ১০ শতক জমি ক্রয় করেন মহেশখালী পৌরসভার মধ্যম গোরকঘাটা এলাকার নুরুল আমিনের ছেলে আতাউল্লাহ সিদ্দিকী। ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল কক্সবাজার সদর সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করা হয়। ক্রয় করে আতাউল্লাহ সিদ্দিকী কক্সবাজার সদরের সাবেক সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর একআদেশে সীমানা নির্ধারণ করে সীমানা পিলার স্থাপন করেন।
ডা. নুরুল আমিন অভিযোগে আরো জানান, জমিটি আতাউল্লাহ সিদ্দিকী দখলের দীর্ঘদিন পর ওবায়দুল্লাহসহ কয়েকজন ভূমিদস্যুর নেতৃত্বে একটি ভূমিদস্যু একটি চক্রের ওই জমিটিতে কুনজর পড়ে। এক পর্যায়ে তারা জমিটি দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে এবং দখলের জন্য রাতের আঁধারে হামলা চালিয়ে ভাংচুরও করে। এ বিষয়টি আতাউল্লাহ জেলা প্রশাসক বরাবরে মৌখিকভাবে অবহিত করলে জেলা প্রশাসক লিখিত অভিযোগ পেয়ে পুনরায় জমিটির সীমানা নির্ধারণ করার আদেশ দেন। আদেশমূলে পুনরায় আতাউল্লাহ সিদ্দিকীকে বুঝিয়ে দেয়া হয়।
ডা. নুরুল আমিন অভিযোগ করে বলেন, বিক্রি এবং কাগজপত্র সব ঠিক থাকলেও পরবর্তীতে ওই ভূমিদস্যু চক্রের ফঁাদে পড়ে আতাউল্লাহর নামে আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সর্বশেষ সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে সঠিক তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়। আগামী ২ মার্চ এই সংক্রান্ত মামলার শুনানী দিন ধার্য্য রয়েছে। শুনানীতে আতাউল্লাহ সিদ্দিকীর হটানোর জন্য সম্প্রতি নারীসহ আটক কাজী রাসেলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মানবপাচার মামলায় আতাউল্লাহ সিদ্দিকী পরিকল্পিতভাবে আসামী করানো হয়।
ডা. নুরুল আমিন বলেন, এদিকে নানা অপতৎপরতার পরও সফল না হওয়ায় ভূমিদস্যূ চক্রটি আতাউল্লাহ সিদ্দিকীর উপর ব্যক্তিগতভাবে হয়রানির মিশন শুরু করে। চক্রটি সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলার চেষ্টা, জমির সীমানা পিলারসহ ঘেরা-বেড়া ভাংচুর, সাইনবোর্ড উপড়ে ফেলেছিল। তারপরও জমিটি নিজেদের আয়ত্বে নিতে সফল না না হওয়ায় ভূমিদস্যূ চক্রটি তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমের আতাউল্লাহ সিদ্দিকীকে আপোষরফার মাধ্যমে স্বার্থ হাসিলের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এতে রাজী না হওয়ায় ভূমিদস্যু চক্রটি আতাউল্লাহ সিদ্দিকীকে মিথ্যা মামলায় ফঁাসিয়ে দিয়েছে।
তিনি জানান, সম্প্রতি গত কিছুদিন ধরে ভূমিদস্যু চক্রটি আতাউল্লাহসহ তার সঙ্গীয় লোকজনকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো এবং মাদক-অস্ত্র দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল। এ নিয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারী চক্রটির ৪০/৫০ জন দলবেধে জমিটি দখলের উদ্দ্যেশে হাজির হয়ে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে আতাউল্লাহ সিদ্দিকী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে উভয়পক্ষের মধ্যে বাক-বিতন্ডতার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আতাউল্লাহকে থানায় নিয়ে আসে। আমরা অভিভাবকরা থানায় হাজির হয়ে আতাউল্লাহকে ছাড়িয়ে আনি আমরা।
এদিকে আলাপের কথা বলে গত ২৬ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় আতাউল্লাহকে পুলিশ থানায় ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাকে মিথ্যা অজুহাতে গত কয়েকদিন হোটেল-মোটেল জোন থেকে নারীসহ আটক কাজী রাসেলের বিরুদ্ধে দায়ের করা মানবপাচার মামলার ৭ নম্বর আসামী দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। আমরা এই পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাই এবং এর সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে আতাউল্লাহ সিদ্দিকীকে মিথ্যা মামলা থেকে বাদ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।