এইচ এম রুহুল কাদের, চকরিয়াঃ
বন্ধ হচ্ছে না মরণব্যাধি তামাক চাষ, বরঞ্চ লোকালয়ে গড়ে উঠেছে তামাক চুল্লী। বিলীন হচ্ছে বনভূমি। স্থানীয় প্রশাসন ও দায়িত্বশীলদের অবহেলায় সবজির রাজ্য এখন মরণব্যাধি তামাকের আধিপত্য । স্থানীয়রা সোচ্চার হলেও তামাক কোম্পানিগুলো টাকার প্রলোভনে কৃষকরা তামাক ক্ষেতে আগ্রহী হচ্ছেন, অথচ গতকয়েকছর ধরে অধিকাংশ চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, কারণ তামাক কোম্পানি গুলা অগ্রিম টাকা দিয়ে চাষে নামায়,ফলে কোম্পানি যে রেট দেয় তাতেই বিক্রি করতে হয়,অনেকটা চাষিদের জিম্মি করে রাখে। তামাক চাষ নিয়ে কাকারার পরিবেশবাদি ছোটন হোছাইন নামের একজন নাগরিক মন্তব্য করেন।

শিক্ষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর সম্প্রীতির ইতিহাস বিবেচনায় আমাদের কাকারা ইউনিয়নটা কক্সবাজার জেলার অন্যকোন ইউনিয়নের তুলনায় কোন অংশে, কোন মানদন্ডে পিছিয়ে নেই। প্রাকৃতিক পরিবেশ বিবেচনায় বরং এগিয়েই ছিলো। এতো শিক্ষিত, সচেতন, সংস্কৃতিমনা মানুষদের জন্মভূমি এবং আবাসভূমিটা গত প্রায় ২০ বছর ধরে ক্রমে প্রকাশ্যে ধ্বংস হচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছে একটি সর্বনাশা পরিণতির দিকে।এই তামাক চাষই সেই চরম ভয়ংকর সর্বনাশা পরিণতির কারণ। তামাক চুল্লি থেকে যে ধোঁয়া বের হয়, তা মাত্রা ছাড়ানো বিষাক্ত, অসহ্য দূর্গন্ধযুক্ত। আমরা গত ২০ বছর ধরে এই বিষ গ্রহন করে চলছি। আমাদের নবজাতক শিশু থেকে কিশোর, যুবক সবার শ্বাস কষ্ট কিংবা মরণ ব্যাধির কারণ হচ্ছে তামাক চুল্লির এই ধোঁয়া। আমাদের সমাজের অধিকাংশ মানুষ বিশেষ করে শিশুরা এই তামাক চুল্লির ধোঁয়ার অসহায় শিকার, শ্বাস কষ্টের রোগীতে পরিণত হয়েছে, এই শিশুদের সুস্থ ভবিষ্যৎ খুবই অনিশ্চিত, তারপরও আমরা সবাই চুপ । যারা এই তামাকের সাথে জড়িত, তারা আমাদেরই কারো বাপ, চাচা, কারো ভাই বন্ধু। তারা শুধু তাদের টাকার অংকটা বুঝেছেন। কি পরিমান ক্ষতি তারা সমাজের করেছে, এই প্রজন্ম এবং আগামী প্রজন্মের করেছেন সেটা তারা বুঝেও চুপ। আমাদের বিশাল বনভূমি এখন সত্যিকার অর্থেই ধ্বংস হয়ে গেছে, গত বিশটা বছর ধরে বনের গাছ কেটে এই তামাক চুল্লিতে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। বন কর্মকর্তাদের চোখের সামনে এই লক্ষ লক্ষ গাছ কেটে বনভূমি বিলীল করা হয়েছে, তারা চুপ, কি কারণে চুপ তা আবার সবাই জানে। এই ধ্বংসাত্নক, বিষাক্ত, জীবনবিনাশী তামাক চাষ বন্ধ করতে হবে। আমরা কোন কারণ ছাড়া এভাবে নিরবে খুন হয়ে যেতে পারিনা। আমারদের সবুজ ভুমি এভাবে কতিপয় মুনাফালোভীর কারণে উজাড়-মরুভূমি হতে পারেনা। আমরা যদি আরো চুপ থাকি, আরো সহ্য করতে থাকি, আমাদেরকে সুদূরপ্রসারী চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে। এর একটা বিহিত করতেই হবে। সুবিধাবাদী মানুষের নিরবতা নয় সচেতন মানুষের নিরবতাই সমাজ ও প্রজন্ম ধ্বংসের কারণ। সমস্ত বিবেকবান, সচেতন পরিচিতজনদের এই সর্বনাশা তামাক চাষের বিরুদ্ধে দাড়ানো অনুরোধ করছি। আমরা প্রশাসনের সবিনয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তামাক চাষ বন্ধ করা হউক গাছ নিধন বন্ধ করা হউক তামাক চুল্লি লোকালয় থেকে দূরে সরিয়ে নেয়া হউক।

এই ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানাব নুরুদ্দীন মোহাম্মদ শিবলী নোমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান,আমরা যে এলকায় তামাক চাষ হচ্ছে সেই এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার দিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দেবো,এবং তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন লোকালয় থেকে তামাক চুল্লী অপসারণের অভিযানে নামবো।