একটা সময় ছিল পড়ার টেবিলে শোভা পেত নানা ধরনের বই।যখন ঘুমিয়ে যেতাম হাতে থাকতো বই।পড়তে পড়তে হঠাৎ লেগে আসতো চোখ দুটো।এভাবে প্রতি মাসে পড়া হয়ে যেত অসংখ্য বই।পড়ার তালিকা কখনো বই শূন্য থাকতো না। আমি ব্যক্তিগত ভাবে যত বই পড়েছি, তার চেয়ে বই কিনেছি বেশী।কিন্তু এখন বই কেনা হয় কম।কারণ আমরা এখন ডিজিটাল। আমাদের ল্যাপটপ, পিসি, ট্যাব, অথবা মোবাইলে ইন্টারনেট সংযোগ থাকে ১৮ ঘন্টা।প্রয়োজন ছাড়া ফেইসবুকে আমাদের সময় কাটে ঘন্টার পর ঘন্টা। সুতরাং বই পড়ার সময় কই।তুলে ধরা চিত্রটি ব্যক্তিগত আমার। আমরা এখন পাঠবিমুখ ডিজিটাল প্রজন্ম। অনলাইনে যে পড়াশোনা হয় না,তা নয়।আমরা মুহুর্তে মুহুর্তেই খবরের আপডেট পাই।একটা সময় ছিল খবরের কাগজ হাতে নিয়ে সম্পাদকীয় -উপসম্পাদকীয় থে‌কে শুরু করে সাহিত্য পাতা পর্যন্ত সবকিছু গোগ্রাসে গিলতাম। কিন্তু এখন নতুন প্রজন্মের পাঠকেরা কাগজের পত্রিকা পড়ে খুবই কম।এই প্রজন্মের সদস্যদের পড়াশোনার দৌড় খুবই কম।ফাঁপা বুলি, বালখিল্যতা, নিজেকে জাহির করার উদগ্র চেষ্টা আমাদের বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।এই প্রজন্মের সবকিছু যেন ফেইসবুক নির্ভর। কার অবস্থান কী সেটা নির্ণয়ের মাপকাঠি ও এখন ফেইসবুক। কৃতিত্ব, খেদ, পাওয়া না পাওয়ার বেদনা সবই এখন উঠে আসে ফেইসবুকে।কাজের কথার চেয়ে ফালতু প্যাঁচাল অনেক বেশী।গড়ার চেয়ে ভাঙ্গার প্রবণতা প্রবল।অনেক সম্ভাবনা অজান্তেই তিলে তিলে ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে সময় ঘাতক ফেইসবুকে।জাতির আগামী বিনির্মাণে যাদের প্রস্তুত হওয়ার কথা,তারাই হারিয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল চোরাবালিতে।পাঠবিমুখ জাতি প্রযুক্তিতে যতই অগ্রসর হোক ;তাদের ভবিষ্যতের ভিত শঙ্কামুক্ত নয়।

মাওলানা আবুল কাসেম আশরাফ
সহকারী শিক্ষক, খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়
খরুলিয়া, সদর, কক্সবাজার।