বলরাম দাশ অনুপম :
জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈল বলেছেন-মানব পাচার মামলার জট কমানো এবং বিচার কাজ সম্পন্নের প্রতিবন্ধকতার কারণ উল্লেখ করে বলেছেন- জেলা আদালতে অসংখ্য মামলার চাপ, বিচারক স্বল্পতা, মানবপাচার মামলার বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন না হওয়া, তদন্ত সংস্থা গুলোর প্রতিবেদনের দূর্বলতা, সমস্ত দাপ্তরিক কাজ ডিজিটালাইজড না করা, মামলা দায়ের করার সময় এবং প্রতিবেদন দেওয়ার সময় বাদী, স্বাক্ষী বা আসামীদের মোবাইল নাম্বার লিপিবদ্ধ না করা এবং তৎকারনে যথাসময়ে বাদী, স্বাক্ষী বা আসামীদের ঠিকানায় আদালতের পাঠানো সমন না পৌছা ইত্যাদি অন্যতম। সদ্য যোগদানকৃত জেলা ও দায়রা জজ বিচারাঙ্গনে দীর্ঘকাল অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে বলেন এই সমস্ত প্রতিবন্ধকতা দূরিকরণে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মামলা দায়ের বা তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদন দেওয়ার সময় মোবাইল নাম্বার ও ইমেইল ঠিকানার প্রয়োজনীয়তা কথা উল্লেখ করে বলেন খুব সহসাই জেলা আদালতে কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করা হবে যাতে করে বাদী,স্বাক্ষী ও আসামীরা এসএমএস বা ইমেইলের মাধ্যমে মামলার সমন জানতে পারেন। পাশাপাশি মানবপাচার প্রতিরোধের লক্ষ্য স্থবির মামলার গতিশীলতা আনয়ন এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত কল্পে ইউএসআইডি এবং উইনরকের সহযোগিতায় কক্সবাজারের সংস্থা নোঙর এর কার্যক্রম আদালতকেই সহযোগিতা করছে বলে মনে করেন এবং মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরীতে আরও বেশি কাজ করার আহবান জানান। তিনি সোমবার নোঙর এর আয়োজনে জেলা ও দায়রা আদালতের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ কাউন্টার ট্রাফিকিং-ইন-পারস্নস প্রোগ্রাম এর অধীনে ইউএসএআইডি এবং উইনরক ইন্টারন্যাশনাল এর আর্থিক ও কারীগরি সহায়তায় নোঙর বিসি/টিআইপি আইনগত সহায়তা প্রকল্পের কর্মসূচীর আলোকে মানব পাচার প্রতিরোধ ও বিদ্যমান মামলাগুলোর গতিশীলতা আনায়নের লক্ষে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এডভোকেট আ.জ.ম মঈন উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন-নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-২ এর জজ জেবুন্নাহার আয়শা, নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-১ এর জজ মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্যট (ভারপ্রাপ্ত) রাজীব কুমার বিশ^াস, যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ মাহমুদুল হাসান, যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ মোহাম্মদ ফখরুউদ্দিন আহমেদ, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ শ্রীমতি মৈত্রী ভট্টাচার্য্য। উপস্থিত ছিলেন-জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম, নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের-৩ এর স্পেশাল পিপি এডভোকেট একরামুল হুদা, নারী ও শিশু ট্রাইনালের-১ এর স্পেশাল পিপি এডভোকেট বদিউল আলম, নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের-২ এর স্পেশাল এপিপি এডভোকেট সাকি এ কাউছার, নোঙর এর নির্বাহী পরিচালক দিদারুল আলম রাশেদ, নোঙর এর প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর মোহাম্মদ হাশেম ভূইয়া, এসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর সোহেল উদ্দিন, উইনরক ইন্টারন্যাশনাল বিসি/টিআইপি প্রোগ্রাম অফিসার বিথি নন্দী প্রমূখ। স্বাগত বক্তব্যে নোঙর-এর নির্বাহী পরিচালক দিদারুল আলম রাশেদ কক্সবাজারে মানবপাচারের চিত্র, মানবপাচার আইনের মামলার বিদ্যমান অবস্থা এবং মামলাগুলোর গতিশীলতা আনয়নে প্রয়োজনীতার কথা উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষন করেন। যুক্তরাষ্টের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ আফগানিস্তান ও সোমালিয়ার সাথে মানবপাচার সূচক টায়ার-২ ওয়াচ লিস্টে অবস্থান করছে। প্রকৃত পক্ষে তা বাংলাদেশের জন্য বেমানান তাই এই অবস্থা বেরিয়ে আসতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।