আলমগীর মানিক,রাঙামাটি :
রাঙামাটির নানিয়ারচরের ১৭ মাইল এলাকায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের হামলায় সাতজন শ্রমিকসহ মোট আটজন আহত হয়েছে। আহতরা সকলেই মানিকছড়ি থেকে নানিয়ারচরের ১৭ মাইল এলাকায় ট্রাকে কাঠ বোঝাই করতে গিয়েছিলো। আহতদের উদ্ধার করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহরা হলেন: ইসমাইল মাঝি(৪৫), মোঃ নাছির(৩৭), সুমন(৪০) বাবু(৩৮), জাহাঙ্গীর(৩৫) ও দুদু মিয়া। এই ঘটনায় আনন্দ মোহন চাকমা নামের একজন পাহাড়িও আহত হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে। রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে পাঁচজন চিকিৎসাধীন আছে এবং বাকি তিনজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে। আহত দুই জনের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক বলে জানাগেছে।
নিরাপত্তাবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে জানাগেছে, নানিয়ারচর উপজেলাধীন বগাছড়ি ১৭ মাইল এলাকার ডিসেন পাড়ায় স্থানীয় বাঙ্গালী বাসিন্দা হাবিব তার নিজস্ব রেকর্ডীয় জায়গায় বসতঘর নির্মাণ করতে গেলে স্থানীয় আঞ্চলিকদল ইউপিডিএফ এর পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়। এই ঘটনায় পাহাড়ি-বাঙ্গালী উত্তেজনা দেখা দিলে নানিয়ারচর থানা পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উক্ত জমিতে কাউকেই অবস্থান না করতে নির্দেশনা জারি করে। এই ঘটনার জেরে ঘটনাস্থলের পাশ্ববর্তি ১৭ মাইল ব্রীজের গোড়ায় ট্রাকে কাঠ বোঝাইরত অবস্থায় কাঠ ব্যবসায়ি আবুকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্ঠা চালালে কর্মরত ১৪জন শ্রমিক বাধা দেয়। এসময় হামলা চালিয়ে শ্রমিকদের সকলকে হাত-পা বেধে বেদড়ক পেঠাতে থাকে। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে গিয়ে শ্রমিকদের উদ্ধার করে রাঙামাটিতে পাঠিয়ে দে।
আহত শ্রমিকরা জানান, আমরা রাঙামাটির মানিকছড়ির কাঠ ব্যবসায়ি আবু সওদাগরের মাধ্যমে তার কাঠ ট্রাকভর্তি করার জন্য ১৭মাইল এলাকা গিয়েছিলাম। সেখানে কি হয়েছে আমরা কিছুই জানতামনা। কিন্তু হঠাৎ করেই আমাদের সওদাগরকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় আমরা বাধা দিই। এসময় আমাদের সকলকে বেধে বেদড়ক পেঠাতে থাকে ২০/২৫ জন চাকমা যুবক। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা আমাদের উদ্ধার করে রাঙামাটিতে পাঠিয়ে দেয়।
এদিকে নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মূলতঃ মোঃ হাবিব-(৩৮) এর রেকর্ডকৃত দখলীয় জমি ইউপিডিএফ (প্রসিত গ্রুপ) এর সমর্থনকারী পাহাড়ীরা জোর পূর্বক বাঙ্গালীদের জমি দখল করার চেষ্টায় পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের মধ্যে সংঘর্ষে সূত্রপাত হয়।
এদিকে, নানিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কবির হোসেন জানিয়েছেন, বর্তমানে ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। উভয়পক্ষকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উক্ত জমিতে না যাওয়ার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় নানিয়ারচর এলাকায় স্থানীয় পাহাড়ি ও বাঙ্গালীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।