আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
চীনের উহান শহর থেকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়ানোর পর এজন্য সামুদ্রিক প্রাণী থেকে শুরু করে সাপ ও বাদুড়কে সন্দেহ করা হচ্ছিল। চীনের একদল গবেষক মনে করছে, সামুদ্রিক প্রাণী কিংবা সাপ-বাদুড় নয়, করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে বিলুপ্তপ্রায় প্যাঙ্গোলিন বা বনরুই থেকে। এক হাজারেরও বেশি বন্যপ্রাণীর নমুনা পরীক্ষা করার পর গবেষকরা এমন অভিমত দিয়েছেন।

গুয়াংজু প্রদেশের সাউথ চায়না অ্যাগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাস ছড়ানোর ক্ষেত্রে সন্দেহে থাকা এক হাজারেরও বেশি বন্যপ্রাণীর নমুনা পরীক্ষা করে দেখা যায়, বনরুইয়ের শরীরে পাওয়া ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সের (কোষের সম্পূর্ণ ডিএনএ বিন্যাসের ক্রম) সঙ্গে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সের ৯৯ শতাংশ মিল রয়েছে।

পিপীলিকাভুক বনরুইকে বিশ্বের সবচেয়ে পাচার হওয়া প্রাণী বলে মনে করা হয়। বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ ইউনিয়নের (আইইউসিএন) এক প্রতিবেদন মতে, গত দশকে এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলো থেকে ১০ লাখেরও বেশি বনরুই ধরে পাচার করা হয়েছে। আর পাচারের গন্তব্য বেশিরভাগ সময়ই চীন ও ভিয়েতনাম হয়েছে, যেখানে এসব দিয়ে ওষুধ বানানো হয়।

উহান শহর থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর পর এতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৭২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে চীনে। এদের মধ্যে একজন আমেরিকান। চীনের বাইরে ফিলিপাইনে একজন ও হংকংয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ হাজার ৫৪৬ জন। চীনসহ বিশ্বের ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

করোনাভাইরাস উহানের সি-ফুড মার্কেট থেকে ছড়িয়েছে বলে সন্দেহ হওয়ার পর সেই বাজারটি বন্ধ করে দেয়া হয়। কমে যায় সামুদ্রিক মাছ-প্রাণি কেনা-বেচাও। এক পর্যায়ে করোনাভাইরাস ছড়ানোর পেছনে সাপ ও বাদুড়ের মতো প্রাণীগুলোকে সন্দেহ করা হয়। এবার সেই তালিকায় বনরুইকে সর্বাগ্রে নিয়ে এলেন গবেষকরা।