জাবেদ নূর শান্ত :

কক্সবাজারে সাড়া জাগানো মেধাবী এবং পরিশ্রমী নারী উদ্যোক্তা নওশাভা মোক্তার সিয়াম জাতীয় পর্যায়ে “বেস্ট লিডারশীপ এ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন।

“WE – Women & e-Commerce Forum” কর্তৃক আয়োজিত ঢাকাস্থ আইসিটি টাওয়ারে অনুষ্টিত হয় “WE TARA Entrepreneur AWARD 2020.” উক্ত অনুষ্টানে প্রধাণ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জনাব আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি এডভোকেট নুরজাহান বেগম মুক্তা, ইভেলি, নগদ সহ বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সদস্যগণ।

জানা যায়, সিয়াম একজন নারী উদ্যোগী হিসেবে মাঠে কাজ করতে নেমে প্রায় এক বছরের মধ্যে নানানধরণের সৃজনশীল কাজে নেতৃত্ব প্রদান করার মাধ্যমে কক্সবাজারের “ই-কমার্স” জগৎকে এনে দিয়েছেন এক অন্যরকম রূপ। কক্সবাজারে ইতিহাসে সর্বপ্রথমবারের মত “ই-কমার্স মেলা” আয়োজন করে সিয়াম। এভাবে সে “ই-কমার্স” কেন্দ্রীক প্রায় সবধরণের বড় পরিসরের নানা আয়োজনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে দিতে জাতীয়ভাবে অর্জন করে নিলো বেস্ট লিডারশীপ এ্যাওয়ার্ড। সিয়ামের এই অর্জনে তার বন্ধু-বান্ধব এবং শুভাকাঙ্ক্ষীগণ খুশীতে ফেইসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনন্দনের ঝড় তুলেছেন।

নওশাভা সিয়াম কক্সবাজার জার্জ কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শাহীন (এ্যাডঃ) এর সহধর্মিণী এবং কক্সবাজার শহরের বাসিন্দা মোক্তার আহমেদ ও আশরাফুন্নিসা জেসমিন দম্পতির একমাত্র কন্যা সন্তান। সে কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী এবং স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী প্রাক্তন ছাত্রী।

পরিবারের চাপে পড়ে সিয়ামকে ২০১৯ এর প্রথম আসরেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেও হার না মনা এই সাহসী তরুণী চার দেয়ালের মধ্যে নিজেকে কখনোই দমিয়ে রাখেননি। বরং, সবসময় ভাল এবং অন্যরকম কিছু কাজ করে দেখানোর চেষ্টা করে গেছেন।

সিয়াম সবসময় বিশ্বাস করেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এখন এক ধাপ এগিয়ে। কারণ, বাংলাদেশের সাবেক এবং বর্তমান প্রধানমত্রী নারী, বাংলাদেশ সংসদের বর্তমান স্পীকার ড.শিরিন শারমিন – তিনিও একজন মহিলা। ঘর সংসার সামলানো, ছেলে-মেয়েদের মানুষের মত মানুষ করে বেড়ে তুলা সেই মাও একজন নারী।

সিয়াম জানান, আমার এই ছোট্ট সফলতাটি আমার জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে থাকবে এবং এই অর্জন আমার হাটি হাটি পা পা করে এক একটাদিন পরিশ্রম করে ঘাম ঝরানো কষ্টের ফসল। বিয়ের আগে বাড়ির চাপে কাজ করে যাওয়ার মত আমি তেমন একটা সুযোগ পাইনি বরং বিয়ের পরে জীবনের নতুন অধ্যায়ে এসে আমি নিজের মত করে বাঁচতে শিখেছি। কারণ, আমার স্বামী এবং বন্ধু-বান্ধব থেকে শুরু করে আমার সকল শুভাকাঙ্ক্ষীগণ আমার পাশে থেকেই আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন যার ফলে আজ আমি আপনাদেরই সিয়াম। আমাকে নিয়ে কে কি বললো তা নিয়ে আমার কিছু যায়-আসে না। কেননা আমি আমার জায়গায় নিজেক শতভাগ সতস্ফুর্ত রেখে কাজ করার চেষ্টা করে গেছি। আমি মনে করি, জীবনে চলার পথে আশেপাশের মানুষগুলোর ভালবাসা পাওয়া খুবই জরুরী। জীবন যেখানে যেমনই থাকুক না কেনো, আমি নিজেকে সবসময় হাসিখুশী রাখার চেষ্টা করি। স্রষ্টার সৃষ্টিতে নিজেকে হাসিখুশী রাখতে পারাটাও কিন্তু বিরাট গুণ। আমাকে সবাই এখন যেভাবে আপনাদের ভালবাসায় সিক্ত করেছেন ঠিক একইভাবে আগামীতেও আপনাদের সকলের ভালবাসা কামনা করছি।

সিয়ামের সাথে কথা বলে আরো জানতে পারি, সিয়াম তার সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে চায় এবং কমাতে চায় বেকারত্বের হার। এমন সব সৃজনশীল উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজ ও দেশের পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানিয়েছেন মেধাবী নারী উদ্যোক্তা নওশাভা মোক্তার সিয়াম।