মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারী বিকেল ৩ টায় কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটের পর্যটকবাহী স্বপ্নের জাহাজ এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করবেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ আবদুস সামাদ বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া কক্সবাজারের সাংসদ সদস্যবৃন্দ, জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার), বিআইডব্লিউটিসি এর উর্ধ্বতন কর্মকতা, জনপ্রতিনিধি ও বিশিষ্টজনেরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। বিষয়টি জাহাজটি পরিচালনায় থাকা কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এম.এ রশিদ সিবিএন-কে জানিয়েছেন।

জাহাজটির স্থানীয় পরিচালক ও এমভি ফারহান এক্সপ্রেস টুরিজম এর সত্বাধিকারী হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর জানান, উদ্বোধনের পর পরই জাহাজটি অতিথি ও ভিভিআইপিদের নিয়ে বঙ্গোপসাগরে নৌ বিহারে যাবে। নৌ বিহার থেকে ফিরে এসে উদ্বোধন উপলক্ষে সন্ধ্যায় কক্সবাজার শহরের একটি তারকামানের হোটেলে রয়েছে অতিথিদের সম্মানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজ।

বিলাস বহুল পর্যটকবাহী জাহাজ এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস এ করে উদ্বোধন এর পরদিন ৩১ জানুয়ারী শুক্রবার থেকেই পর্যটকরা কক্সবাজার থেকে সরাসরি সাগর পথে সেন্টমারটিন ভ্রমন করতে পারবেন।
জাহাজটির কক্সবাজার এর পরিচালক ও ফারহান এক্সপ্রেস ট্যুরিজম এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক এম হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর সিবিএন-কে জানান, স্বপ্নের জাহাজটি পরিচালনায় থাকছে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিঃ। কক্সবাজারে জাহাজটির সার্বিক তত্বাবধান করবেন–ফারহান এক্সপ্রেস ট্যুরিজম। এই জাহাজটি হচ্ছে, বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌ পরিবহন সংস্থা–বিআইডব্লিওটিসি এর জার্মানি থেকে আমদানিকৃত উপকূলীয় যাত্রিবাহী জাহাজ বহরের লিজেন্ডারি নৌযান সাবেক এম.ভি আলাউদ্দিন আহমেদ। যা বর্তমানে এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস নামে রিবডি করে নতুন ভাবে, নতুন সাজ সজ্জায় রূপান্তরিত হয়েছে।
কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছড়া (বিমানবন্দর রোড) বিআইডব্লিওটিসি এ ঘাট থেকে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন এর উদ্দেশ্যে নিয়মিত ছেড়ে যাবে পর্যটকদের স্বপ্নের এ জাহাজটি। কক্সবাজার বিআইডব্লিওটিসি এ ঘাট থেকে ছাড়বে প্রতিদিন সকাল ৭ টায়। সেন্টমার্টিন থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছাড়বে প্রতিদিন বিকাল ৩টায়। উভয় দিক থেকে গন্তব্যে পৌছুতে সময় লাগবে প্রায় ৫ ঘন্টা। কিছুদিন পর দিন বড় হলে সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার সময় আরো ১ ঘন্টা পেছানো হতে পারে। জাহাজটি সেন্টমার্টিন যাওয়ার সময় দিনের বেলার সমুদ্রের অপরূপ সৌন্দর্য ও কক্সবাজার আসার সময় সন্ধ্যা ও রাত্রিবেলার বঙ্গোপসাগরের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকেরা।

এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজ এর ইকোনমি আসনের (২য় শ্রেনীর চেয়ার) ভাড়া আসা-যাওয়া জনপ্রতি ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বিজনেস শ্রেণী আসন (১ম শ্রেনী চেয়ার) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৫শ’ টাকা। মোট ১৭ টি লাক্সারি ক্লাস কেবিন রয়েছে এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজ এ। এদের মধ্যে ইকোনমি শ্রেণীর কেবিন (২য় শ্রেনী) এর ভাড়া ১২ হাজার টাকা ও লাক্সারি ক্লাস (ভিআইপি) কেবিনের ভাড়া ১৫ হাজার টাকা। প্রতিটি কেবিন ২ জন এর জন্য প্রযোজ্য, অতিরিক্ত জনপ্রতি আলাদা সাধারণ টিকেট কেটে নিতে হবে । প্রতিটি টিকেট এর সাথে সৌজন্য মূলক নাস্তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আর ভাড়া হচ্ছে আপ–ডাউন বা আসা–যাওয়া প্যাকেজ। কোন যাত্রী ভিন্ন তারিখে ফিরতে চাইলে তা টিকেট সংগ্রহ করার সময় উল্লেখ করতে হবে।

কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এম.এ রশিদ সিবিএন-কে জানান, কোন বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নয়, কক্সবাজারে পর্যটনের নতুন দিগন্ত উম্মোচন করে পর্যটন শিল্পে সম্ভাবনার খাতকে আরো প্রসারিত করার জন্যই বিলাসবহুল পর্যটকবাহী নতুন জাহাজ, নতুন রুট কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন সাগরপথে চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি। ইঞ্জিনিয়ার এম.এ রশিদ আর বলেন, এটাতে অনেক আর্থিক ঝুঁকি আছে জেনেও পর্যটকদের আরো বেশী কক্সবাজারমূখী করতে, দেশে বিদেশে কক্সবাজারের পরিচিতকে আরো ব্যাপক করতে সম্পূর্ণ দেশপ্রেমবোধ থেকে পর্যটকদের জন্য নিরাপদ ও আনন্দদায়ক নৌ ভ্রমণের সুবিধার্থে আমাদের এ প্রয়াস। জাহাজটি সামুদ্রিক পথে চলাচলের সময় যেকোন ঝুঁকি মোকাবেলায় সব ধরণের ব্যবস্থা রয়েছে ইনশাআল্লাহ। তিনি তাঁর এ উদ্যোগের সফলতার জন্য নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী, পুলিশ প্রশাসন, বিজিবি, টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন, এলজিইডি, কক্সবাজার জেলা পরিষদ, কক্সবাজার পৌরসভা, সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ, সম্পৃক্ত এলাকার জনগণ সহ সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেছেন।