জসিম মাহমুদ, টেকনাফ:
টেকনাফের শাহপরী দ্বীপ জেটি ঘাট থেকে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিলেন ভারতের সাতাঁরু মুকেশ গুপ্ত। কাজী হামিদুল হকের প্রচেষ্টায় শুরু হওয়া বাংলা চ্যানেল সাঁতারের ১৪তম বছরে জয়ীদের তালিকায় আজ নাম লেখালেন ভারতীয় দূরপাল্লর সাঁতারু মুকেশ গুপ্ত। জল বাঁচাও-গাছ বাঁচাও এই স্লোগান নিয়ে কলকাতার মুকেশ এবার পাড়ি দেন বাংলা চ্যানেলের টেকনাফ শাহ পরীর দ্বীপ জেটি থেকে সেন্টমার্টিন জেটির ১৬.১ কিলোমিটারের চ্যানেলটি।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে টেকনাফ প্রান্ত থেকে সাঁতার শুরু করেন মুকেশ গুপ্ত ৪ ঘন্টা ৮ মিনিট সময় নিয়ে যখন সেন্টমার্টিন প্রান্ত ছুঁয়েছেন তখন, ঘড়ির কাঁটায় বেলা ১টা ৪৫ মিনিট। এডভেনচার মুকেশের কোনো চ্যানেল জয়ের চ্যালেঞ্জ এবারই প্রথম। বাংলা চ্যানেল জয় দিয়ে মুকেশ চ্যানেল সুইমিং বা লং ডিসটেন্স ওপেন ওয়াটার সি সুইমিংয়ের এলিট ক্লাবে নিজের নাম লেখালেন।
২১ বছর বয়সী দুরন্ত ডানপিঠে স্বভাবের মুকেশ গুপ্ত পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার প্রায় সবগুলো ব্রিজে অসংখ্যবার ব্রিজ জাম্পিং করেছেন। কেবল হাওড়া ব্রিজ থেকেই ৩২ বার জাম্প দেয়ার রেকর্ড আছে এই ব্রিজের জাম্পারের। আগামীতে আন্তঃমহাসাগরীয় কায়াকিং, ভারতীয় চ্যানেলগুলোসহ আরো কিছু নতুন ও দুঃসাহসিক দূরপাল্লার সাঁতারের পরিকল্পনা ব্যক্ত করে মুকেশ গুপ্ত ।
সাতাঁরু মুকেশ গুপ্ত জানান, আমাদের এই ধরিত্রীর জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবসৃষ্ট দূষণের কবলে আমাদের ভূ-উপরস্থ পানি ও গাছপালা আজ চরম সংকটের প্রহর গুনছে। আমাদের একটু সচেতনতা ও সক্রিয় অংশগ্রহণে এই সংকট রোধ করা সম্ভব, এই বিশ্বাস থেকেই সকলের দৃষ্টি আকর্ষণে এই দুঃসাহসিক বাংলা চ্যানেল সাঁতার।

এভারেস্ট একাডেমির আয়োজনে, মুকেশ গুপ্তের এই সাঁতার অভিযানের শুরু থেকে সব কিছুরই নির্দেশনা দিয়ে এসেছেন তার সাঁতার প্রশিক্ষক ও মেন্টর কলকাতার পুষ্পেন সামান্থ। রেফারির দায়িত্ব পালন করেন ফিফা রেফারি তোফাজ্জল হোসেন বাচ্চু এবং নেভিগেটর হিসাবে ছিলেন রাফাহ উদ্দিন সিরাজী। সাঁতার দলটির সহযোগিতায় ছিলেন নর্থ আলপাইন ক্লাব বাংলাদেশ, ট্যুর অপারেটর হিসাবে এলিগ্রো ট্যুরস, মেডিকেল সাপোর্ট-এ হেলদি হোম বিডি’র ডাঃ মাহমুদুল হাসান খান, লাইফ গার্ড হিসাবে ছিলেন সিআইপিআরবি-এর সি সেফ সুইমিংয়ের মো: কামাল।
প্রতি বছর দেশ-বিদেশের অনেক সাঁতারুই বাংলা চ্যানেল জয়ীদের নামের তালিকায় নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করছেন এবং এই চ্যানেল জয়ের পরিকল্পনা করছেন। বিশ্বের যেকোনো সি চ্যানেলের তুলনায়, বাংলা চ্যানেল অনেক বেশি আকর্ষণীয় ও নিরাপদ।