ডেস্ক নিউজ: 
‘শহীদ নূর হোসেনের মায়ের চোখের জল আমাকেও কাঁদিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা। নূর হোসেনকে নিয়ে করা মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগের যে দাবি উঠেছে সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পদত্যাগের বিষয়ে সংসদে বলব।’

সম্প্রতি জাতীয় পার্টির এক আলোচনা সভায় এরশাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেন ‘মাদকাসক্ত’ বলে মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দেন জাতীয় পার্টির এ নেতা। এ নিয়ে অনেকেই তার পদত্যাগ দাবি করেন। রাঙ্গার বিচার চেয়েছেন নূর হোসেনের মাও।

‘এরশাদের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের শহীদ নূর হোসেন নাকি ইয়াবাখোর ছিলেন।’ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমন মন্তব্য করেন নূর হোসেনের মৃত্যুর তারিখে পালিত হওয়া গণতন্ত্র দিবসে, ১০ নভেম্বর। বিতর্কিত ওই বক্তব্যের বিষয়ে জাগো নিউজের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয় রাঙ্গার কাছে।

তিনি বলেন, ‘নূর হোসেনকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছি, তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। নূর হোসেনের মায়ের চোখের জল আমাকেও কাঁদিয়েছে। আমারও মা আছেন, আমারও পরিবার আছে। নূর হোসেন নিহত হয়েছেন, এ নিয়ে কোনো ভুল নেই। তাকে নিয়ে যে যে-ই রাজনীতি করি না কেন, নূর হোসেন নিহত হয়েছিলেন, এটাই বাস্তব। আমি নূর হোসেনের মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।

কী এমন প্রেক্ষাপট দাঁড়াল যে নূর হোসেনকে নিয়ে আপনি এমন মন্তব্য করলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে রাঙ্গা বলেন, “নূর হোসেন দিবসে আমরা গণতন্ত্র দিবস পালন করি। এদিন পুরান ঢাকা থেকে নেতাকর্মীরা এসেছিলেন। আমাদের নেতাকর্মীদের দেখে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘এরশাদের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘স্বৈরাচারের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’।”

‘আমরা তো আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করেছি। কিন্তু আওয়ামী লীগের হাতেই আমাদের কর্মীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন, মামলার শিকার হচ্ছেন। অথচ আমরা কিছুই করতে পারছি না।’

‘নূর হোসেনের বাড়িতে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও গিয়েছিলেন। তিনি নূর হোসেনের মায়ের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এসেছেন। এরপরও কেন এমন স্লোগান দেয়া হয়?’

এরশাদকে গালি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ প্রশ্নে নূর হোসেনের দোষ কোথায়? অথচ আপনি নূর হোসেনকে গালি দিলেন! এটি কতটুকু শোভনীয়- এর জবাবে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘আবারও বলছি, নূর হোসেনের ব্যাপারে মন্তব্য করে আমি মর্মাহত। তাকে গালি দেয়া কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। এরপর তো আসলে কিছুই করার থাকে না। আপনারা বলুন, ক্ষমা চাওয়ার পর আর কী করতে পারি? আমার ভুল আমি সচেতনভাবে স্বীকার করছি।’

অনেকেই আপনার পদত্যাগ দাবি করছেন। সংসদেও আলোচনা হচ্ছে। পদত্যাগ করবেন কি-না?

‘পদত্যাগের বিষয়ে আমি সংসদে বলব’- বলেন মসিউর রহমান রাঙ্গা।