সিবিএন ডেস্ক
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ রবিবার (১০ নভেম্বর) ভোর ৫টার দিকে পশ্চিম উপকূল অতিক্রম করেছে। ঝড়টি ক্রমশ দুর্বল হয়ে উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বেশকিছু ঘরবাড়ি ভেঙেছে। ঝড়ের তাণ্ডবে এসব এলাকায় উপড়ে পড়েছে গাছপালা।
আমাদের খুলনা প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর আঘাতে খুলনা সদরে গাছপালা ও ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
খুলনার কয়রা উপজেলা পরিষদের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাফর রানা বলেন, ‘মূল ঝড়ের আঘাত ভোররাত সাড়ে চারটা থেকে শুরু হয়েছে, সেটি এখনও চলমান। এতে কয়রা উপজেলার অনেক ঘরবাড়ি ভেঙেছে, গাছপালা উপড়ে পড়েছে। এছাড়া জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ফুট বেশি রয়েছে।’
জাফর রানা আরও বলেন, ‘ঝড় শুরুর হওয়ার সময় ভাটা ছিল। আর দুই ঘণ্টা ঝড় স্থায়ী হলে জোয়ার এসে পড়বে। তখন পানির চাপ বেড়ে যাবে। এতে কয়রা উপজেলার উত্তর-দক্ষিণ বেতকাশি এ দুটি ইউনিয়ন প্লাবিত হতে পারে। এছাড়া দুর্বল থাকা বাঁধ ভাঙার সম্ভাবনা রয়েছে।’
দাকোপ উপজেলা পরিষদের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আব্দুল কাদের বলেন, ‘দাকোপে রাত ১টার দিকে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া শুরু হয়। ভোরের দিকে এর পরিমাণ বেড়ে যায়। এখনও তা চলমান আছে। এতে দাকোপ উপজেলা পরিষদের তেঁতুল গাছটি পড়ে গেছে। উপজেলা জুড়ে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।’
এছাড়া বাগেরহাটে মধ্যরাত থেকে ভারী বর্ষণের সঙ্গে দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। অতি বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম করলেও উপকূলীয় অঞ্চল, পায়রা এবং মোংলা বন্দর ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতাভুক্ত থাকবে। অন্যান্য সংকেতও অপরিবর্তিত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঝড়ের কারণে কয়রায় সর্বোচ্চ ৯৩ কিলোমিটার দমকা বাতাসের গতিবেগ রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া খুলনা, বরিশাল, বরগুনা, পাথরঘাটা এলাকায় দমকা বাতাস ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।’
এদিকে আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে শক্তি ক্ষয় করে দুর্বল হচ্ছে। দুপুরের দিকে এটি বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।’ ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের গতিবেগ কমে আসায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমবে বলে প্রত্যাশা করছেন এই আবহাওয়াবিদ।