মোহাম্মদ ফারুক:
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ও সরঞ্জাম এবং পরিবেশের উন্নত হলেও হয়নি সেবার মান এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তবে কর্তৃপক্ষ বলছেন, জনবল সংকেটর কারণে আশানুরূপ সেবার মান বাড়ানো যাচ্ছে না।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘ একযুগ আগে সদর হাসপাতালে ছিল ১০০ শয্যা। ২০০৭ সাল থেকে গত ১২ বছরে এসময়ে সদর হাসপাতালকে ১০০ থেকে ২৫০শ, শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু ১০০ শয্যার জনবল দিয়েই চলছে ২৫০শ’ শয্যার এই হাসপাতাল।
৬৮ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও আছেন ৪৯ জন। ১৯ পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যাও ১শ’ শয্যার। নার্স ১৩৫ জনের পদ থাকলেও আছেন ১২২ জন। ৩য় শ্রেনির কর্মচারি ৩৯ জনের মধ্যে আছেন ২০ জন। ৪র্থ শ্রেনির কর্মচারি ২৪ জনের মধ্যে আছেন ১৮ জন। ১শ, শয্যার জনবলেও সঙ্কটে আছেন সদর হাসপাতাল। অথচ ১শ, শয্যার সঙ্কট জনবল নিয়ে চলছে সদর হাসপাতাল। এতে করে হাসপাতালের কাক্সিক্ষত সেবা মিলছে না।
কুতুবদিয়া থেকে সদর হাসপাতালে সেবা নিতে আসা কহিনুর আক্তার জানান, কয়দিন আগে হাসপাতালে আমার ডেলিভারি হয়েছে, সিজার হওয়ার পর থেকে ডাক্তারদের দেখাই মিলেনা। অপারেশন অথবা ট্রায়ালে ব্যাস্ত পাশাপাশি নার্সদের প্রায় একই অবস্থা, কাছে ডাকলে সাড়া দেয়না,বলে দেখতে পাচ্ছনা ব্যস্ত আছি।
হাসপাতালে রোগীশয্যা (বেড) বৃদ্ধি করেছে সরকার। নির্মাণ করেছে নতুন নতুন ভবন। কিন্তু শয্যাসংখ্যা বাড়ানোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করা হয়নি। এ কারণে হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা বাড়লেও সেবার মান খুব বেশি বাড়েনি বলে অভিযোগ করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।
বর্তমানে পুরনো জনবল দিয়ে নতুন নতুন রোগীশয্যার চিকিৎসাসেবা সামাল দিয়ে আসছে জেলার একমাত্র এই হাসপাতালে। এতে ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালের স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা। দক্ষিন মিঠাছড়ি থেকে আসা আব্দু সালাম জানান,আহত অবস্থায় হাসপাতালে র্ভতি হন। কিন্তু ডাক্তার,নার্সদের খুব কম দেখা মেলে,এতে করে কাক্সিক্ষত সেবা মিলছেনা তার।
দেশের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবার অবকাঠামোতে অনেক নতুনত্ব এনেছে সরকার। কিন্তু নতুনত্ব আনার ক্ষেত্রে এই জেলার সার্বিক দিক বিবেচনা করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। কক্সবাজার জেলার স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, স্থায়ী পদের বাইরেও বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হওয়া চিকিৎসক, ইন্টার্ন, চিকিৎসকদের দিয়ে রোগীর চিকিৎসাসেবা চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ান, ফার্মাসিস্ট, আয়াসহ কর্মচারী সঙ্কটের কারণে হাসপাতালের রোগী সেবা ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তাই রোগী সেবার মান বাড়াতে হলে শয্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জনবল বাড়ানো দরকার বলে মনে করছেন সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, এক যুগ আগে জেলা সদর হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা বাড়ানো হলেও এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করা হয়নি। এ কারণে হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা বাড়লেও সেবা দিতে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। জনবল সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে । জনবল বাড়ানো এবং ৫শ,সয্যা বিশিষ্ট উন্নত করার বিষয়ে মন্ত্রালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।