মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
কক্সবাজার প্রশাসনিকভাবে ‘এ’ শ্রেণির একটি জেলা। জেলায় আরো ২টি পৃথক নতুন উপজেলা হওয়ার বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জেলায় এদু’টি প্রশাসনিক নতুন উপজেলা হলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনিকভাবে ‘বিশেষ জেলা’য় উন্নীত হবে। কিন্তু কক্সবাজার জেলা জজশীপ এখনো ‘বি’ শ্রেণির জজশীপ রয়ে গেছে। কক্সবাজার জেলা জজশীপকে ‘বি’ শ্রেণি থেকে ‘এ’ শ্রেণীতে উন্নীত করা হলে বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে উত্থাপিত প্রতিবেদনে উল্লেখিত সমস্যা সমুহ ‘এ’ শ্রেণির জজশীপের অর্গানোগ্রামের কারণে অধিকাংশ সমস্যা আপনাআপনি সমাধান হয়ে যাবে।
শনিবার ২ নভেম্বর সকালে কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত কক্সবাজার জেলা জজশীপ ও ম্যাজিস্ট্রেসীর বার্ষিক বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে “কক্সবাজার জজশীপের দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলায় বিদ্যমান সমস্যা সমুহ ও উহা সমাধানে করণীয় নির্ধারণ” শীর্ষক প্রবন্ধের উপর আলোচনায় এ কথা উঠে আসে। প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন কক্সবাজারের যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ-২ মাহমুদুল হাসান। প্রবন্ধের উপর ও বিদ্যমান সমস্যার উপর চুলচেরা মুক্ত আলেচনা হয়।
কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ খোন্দকার হাসান মোঃ ফিরোজ এ বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। উপস্থাপিত প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, প্রায় দু’বছর পূর্বে কক্সবাজার জেলা জজশীপকে ‘বি’ শ্রেণি থেকে ‘এ’ শ্রেণিতে উন্নীত করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র প্রেরণ করা হলেও ঐ পত্র এখনো আলোর মুখ দেখেনি। যেটা কক্সবাজার জেলাবাসীর জন্য খুবই দূর্ভাগ্যের বিষয়।
কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ সম্মেলন আয়োজন কমিটির নির্বাহী সদস্য ও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ দেলোয়ার হোসেন শামীম এর নান্দনিক ও মনোমুগ্ধকর সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) বেগম জেবুন্নাহার আয়শা, কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলহাজ্ব মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবু তাহের, যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ ও সম্মেলন আয়োজন কমিটির আহবায়ক-ছৈয়দ মুহাম্মদ ফখরুল আবেদীন, সিভিল সার্জন মোঃ আবদুল মতিন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাঃ শাজাহান আলি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার বিশ্বাস, ইউএনডিপি’র প্রতিনিধি সাবেক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মাহবুব মোর্শেদ, জেলা সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মতিন, আরএমও ডা. শাহীন আবদুর রহমান, কক্সবাজার জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (দক্ষিণ) হুমায়ুন কবির, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চকরিয়া চৌকি আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার দেব, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাং হেলাল উদ্দিন, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মৈত্রী ভট্টাচার্য, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেরিন সুলতানা, সিনিয়র সহকারী জজ খাইরুন্নেচ্ছা, ফাহমিদা আক্তার, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল হক, জিয়াউল হক, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আ.জ.ম মঈন উদ্দিন, জিপি মোহাম্মদ ইসহাক, স্পেশাল পিপি মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, একরামুল হুদা, সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, এডভোকেট নুরুল মোস্তফা মানিক, এডভোকেট কামরুল হাসান, এডভোকেট রাখাল চন্দ্র বড়ুয়া, অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট মোজাফফর আহমদ হেলালী, এডভোকেট সুলতানুল আলম, এডভোকেট মোস্তাক আহমদ, দুদকের প্যানেল আইনজীবী এডভোকেট সিরাজদৌল্লা, এডভোকেট আবদুর রহিম, সদর মডেল থানার ওসি সৈয়দ আবু মুহাম্মদ শাহজাহান কবির, কোর্ট ইনস্পেকটর মাহবুবুর রহমান, পিবিআই এর ইন্সপেক্টর মেজবাহ উদ্দিন প্রমুখ।
সম্মেলনে উপস্থাপিত প্রতিবেদনের উপর সিভিল ও ফৌজদারী মামলার সমস্যাকে দু’ভাগ করে দীর্ঘ মুক্ত আলোচনা, বিদ্যমান সমস্যা সমুহ সমাধানে প্রস্তাব ও গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশমালা পেশ করা হয়। জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস.এস. আব্বাস উদ্দিনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায়
সম্মেলনের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন, জেলা জজ আদালত ভবন মসজিদের ইমাম মাওলানা আবু তাহের , গীতা পাঠ করেন প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী ও ভেদ পাঠ করেন সেতু বড়ুয়া।
সম্মেলনে মুক্ত আলোচনায় কক্সবাজার জেলার বিচার বিভাগ, বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী, বিচার সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা অংশ নেন। দিনব্যাপী এই বিচার বিভাগীয় সম্মেলনকে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর সোয়া ১২ টা পর্যন্ত প্রথম পর্ব, বেলা ২ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।