জাগোনিউজ : লন্ডনে বসে মনিপুরের রাজা লেইশেমবা সানাজাওবার পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই ভারত থেকে আলাদা হওয়ার সংগ্রাম করে আসছে মনিপুর রাজ্য।

লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে মনিপুরের মহারাজার পক্ষ থেকে মনিপুর রাজ্য পরিষদের মুখ্যমন্ত্রী ইয়ামবেন বিরেন এবং মনিপুর রাজ্য পরিষদের বৈদেশিক সম্পর্ক ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী নারেংবাম সমরজিত প্রবাসী সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় লন্ডনেই এই নির্বাসিত সরকার গড়ে উঠবে। মনিপুর রাজ্যের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে মহারাজা তাদের ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকার দিয়েছেন বলে একটি নথি দেখিয়েছেন তারা। ওই দুই মন্ত্রী বলেন, ভারতে দমন-নিপীড়ন থেকে বাঁচতে তারা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ব্রিটেনের কাছে আশ্রয় চেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন তারা।

তারা জানিয়েছেন যে, ভারতে থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে তারা হয়তো গ্রেফতার হতে পারেন অথবা ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের হত্যা করতে পারে।

এক ঘোষণায় তারা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে মনিপুর সরকারের স্বাধীনতা ঘোষণার এটাই সঠিক সময়। আমরা জাতিসংঘের প্রতিটি সার্বভৌম সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি যে, তারা আজ থেকে যেন মনিপুরের নির্বাসিত সরকারকে স্বীকৃতি দেয়। মনিপুরের ৩০ লাখ বাসিন্দা স্বাধীনতার স্বীকৃতি চায় বলেও উল্লেখ করেন তারা।

মনিপুরের এই দুই নেতা জানিয়েছেন, ভারত সরকারের কাছ থেকে তারা ঘৃণা এবং শত্রুতা ছাড়া আর কিছুই পাননি। তারা বলেন, ভারতের অবস্থানের সময় তাদের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা মোটেও সহজ ছিল না।

কারণ এমন কিছু ঘটলে ভারত সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত। তাদের নেতাদের ভারত সরকারের হাতে আটক, নির্যাতন বা বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হতো।

তারা বলেন, নরেন্দ্র মোদি সরকার হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠায় ছোট জাতি এবং সম্প্রদায়ের প্রতি অসহিষ্ণু আচরণ করছে। তারা এসব সম্প্রদায়ের বিনাশ সাধনে বিশ্বাসী। তাই ভারতে থেকে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করা তাদের জন্য মোটেও নিরাপদ ছিল না।

মনিপুরের এই নেতারা বলেন, মনিপুরে গত ১০ বছরে অন্যায়ভাবে প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া আরও দেড় হাজারের বেশি মানুষকে অবৈধভাবে বন্দি করা হয়েছে। গত কয়েক দশকে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।