পেকুয়া প্রতিনিধি :

পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের সবজীবন পাড়া এলাকার হারুনুর রশিদের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৪০)। পেশায় একজন গৃহিণী। তিন সন্তানের জননীও তিনি। কক্সবাজারের হ্যাচারীতে দশ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন তার স্বামী হারুনুর রশিদ।

স্বামীর অল্প এ আয়ে টানাপোড়েনের সংসারে সন্তানদের পড়াশোনা করানো ছিল এক প্রকার বিলাসিতা। তখনি গৃহিণী ফাতেমা বেগম নেমে পড়েন জীবনযুদ্ধে। ঘরে বসে দর্জির কাজ করে হাল ধরেন সংসারের। পড়াশোনা চালিয়ে নেন তিন সন্তানের। সংসারের সব কাজ সেরে যা সময় হাতে থাকতো, বসে পড়তেন সেলাই মেশিন নিয়ে। কারণ সন্তানদের শিক্ষার ব্যাপারে অদম্য ছিলেন ফাতেমা বেগম। যেকোনো মূল্যে তাদের সুশিক্ষিত করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন মহীয়সী এ মা।

তবে, শত পরিশ্রম হলেও দিনশেষে একটি স্বস্তি ছিল তার। নিজের সন্তানরা পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে একদিন দুঃখ ঘোচাবে তাদের। কিন্তু অভাগা এই মা কি জানতেন, তার জন্য আরো কঠিন সংগ্রাম বাকি রেখেছিলেন সৃষ্টিকর্তা !

২০১৮ সালের প্রথম দিকে অসুস্থতা নিয়ে নানা ডাক্তারের শরণাপন্ন হন তিনি। ফেব্রুয়ারী মাসের শেষের দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে তার ব্রেস্ট ক্যান্সার সনাক্ত করেন ডাক্তার। তখনি মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে সংগ্রামী এ মায়ের।

স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে হ্যাচারীর চাকরি ছেড়ে নিজের এলাকায় এখন টমটম অটোরিকশা চালাচ্ছেন স্বামী হারুনুর রশিদ। স্ত্রীর চিকিৎসা জন্য ইতিমধ্যে তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে তার।

বর্তমানে তাদের বড় ছেলে হাসান উদ্দিন রিমন পড়াশোনা করেন চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইউষ্টিটিউটে। কম্পিউটার ইন্জিয়ারিংয়ের ষষ্ঠ সেমিস্টারে ছাত্র সে। মেয়ে রাজিয়া সোলতানা রিপন পড়ছেন চকরিয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি ১ম বর্ষে ও ছোট ছেলে হোসাইন উদ্দিন পড়েন ফাঁশিয়াখালী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসায়। সে এবারে জেডিসি পরীক্ষা দেবে।

বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নাছির উদ্দীন মিয়া বলেন, সহায় সম্পত্তি যা ছিল সবকিছুর বিনিময়ে এতদিন চিকিৎসা চালিয়ে গেছেন। স্বামী হারুনুর রশিদ স্ত্রীর চিকিৎসা চালাতে গিয়ে ইতিমধ্যে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধার নিয়েছেন এক লাখ টাকারও বেশি অর্থ। টাকার অভাবে ফাতেমা বেগমের চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। কিন্তু জীবন সংগ্রামের কঠিন এ যুদ্ধে কোনভাবে হারতে চাননি ফাতেমা বেগম।

স্বামী হারুনুর রশিদ বলেন, আমার স্ত্রীর চিকিৎসা জন্য ইতিমধ্যে তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর অধিকাংশ ধারদেনা। বর্তমানে তার ওষুধ, পরীক্ষা ও কেমোথেরাপির জন্য প্রতিমাসে প্রয়োজন হচ্ছে প্রায় ৩০হাজার টাকা। আমি দিনমজুর মানুষ। এত টাকা জোগাড় করতে আমাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ডাক্তার বলেছেন অপারেশনের মাধ্যমে আমার স্ত্রীকে সুস্থ করা সম্ভব। কিন্তু এ অপারেশনের জন্য প্রয়োজন তিন লাখ টাকা। সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা যদি এগিয়ে আসেন আমার স্ত্রীকে হয়তো বাঁচানো যাবে। আমাদের তিনটি সন্তানের ভবিষ্যত চিন্তা করে তাদের মাকে বাঁচতে এগিয়ে আসার জন্য সবার কাছে করজোড় মিনতি জানাচ্ছি।

অার্থিক সহায়তা পাঠানোর ঠিকানা-

ফাতেমা বেগম,
বিকাশ পারসোনাল- 01819033852

ব্যাংক হিসাব নংঃ-

ফাতেমা বেগম A/C- 019212200005234

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক,পেকুয়া শাখা।