রিয়াজ উদ্দিন ,পেকুয়া :

পেকুয়ায় লাশ উদ্ধারের ৩ দিনের মাথায় ভিকটিমের পিতা করল আদালতে মামলা। পরিবার থেকে জানানো হয়েছে গৃহবধূকে পিটিয়ে ও শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে। লাশ উদ্ধার নিয়ে ধু¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। নিহত গৃহবধূর নাম হাজেরা বেগম (২০)। ২৬ অক্টোবর পেকুয়া থানা পুলিশ ওই নারীর মরদেহ স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে। এ নিয়ে পরষ্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। সুরতহাল রিপোর্ট শেষে মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। নিহত হাজেরা বেগমের পরিবারের দাবী মেয়েটিকে নিষ্টুরভাবে পিটিয়ে ও স্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে। লাশ উদ্ধারের পর নিহতের পিতা বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় এজাহার পৌছায়। তবে পুলিশ সেটি আমলে নেননি। শাশুড় বাড়ীর লোকজন বলেছে, হাজেরা বেগম আত্মহত্যা করেছে। স্বামীর সঙ্গে অভিমান এনে আত্মহত্যা করেছে বলে তারা দাবী করছে। কিন্তু পিতাসহ নিহতের স্বজনরা বলছেন, আত্মহত্যা নয়। তাদের মেয়েকে স্বামী ও শাশুড় বাড়ীর লোকজন পিটিয়ে হত্যা করে। তারা জানায়, হাজেরা বেগম ও স্বামী মো: খোকনের মধ্যে বনিবনা চলছিল। খোকন অপর এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক করে। বিষয়টি স্ত্রী আঁচ করতে পেরেছেন। মূলত এ সুত্র ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য জীবনে কলহ দেখা দিয়েছে। গত ১ মাস আগে যৌতুক দাবী নিয়ে স্ত্রী ও স্বামীর মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় স্ত্রীকে পিটিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয় স্বামী। দু‘পক্ষকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে। গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মুসলেকা দিয়ে স্ত্রীকে সংসারে ফেরান স্বামী। নিহতের পিতা জানায়, ২৬ অক্টোবর দুপুরে আমার মেয়েকে তারা নিষ্টুরভাবে পিটিয়ে ও স্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে। কিন্তু হত্যাকে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করতে মৃতদেহ বাড়ির ছাঁদের আড়াই টাঙ্গিয়ে দেয়। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর সময় পুলিশ দেখেছে আমার মেয়ের শরীরে ব্যাপক নির্যাতনের চিহ্ন। আমাকে স্থানীয়রা মেরে ফেলার এ খবর দেয়। লাশ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আমরা হাসপাতালে গিয়ে দেখেছি হাসপাতালে মেয়ের লাশ ফেলে তারা পালিয়ে যায়। আমি নিশ্চিত আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। নিহত হাজেরা বেগমের ছোট ভাই ছাত্রলীগ নেতা রবিউল আলম জানায়, অনেকবার নির্যাতন করেছে আমার বোনকে। শালিসি বৈঠকে স্বামী মুসলেকা দিয়ে তাকে সংসারে নিয়ে যান। ঘটনার কয়েক দিন আগে আমাদের বাড়ি থেকে শাশুড় বাড়ি গিয়েছিল। যৌতুক ও পরকীয়া সম্পর্কের কারনে বোনকে মেরে ফেলা হয়েছে। এ দিকে ওই ঘটনায় নিহতের পিতা বাদশাহ মিয়া বাদী হয়ে চকরিয়া সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলার নালিশি অভিযোগ প্রেরন করে। হাজেরার স্বামী খোকনকে প্রধান আসামীসহ ওই মামলায় ৫ জনকে আসামী করে। ২৯ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বিজ্ঞ বিচারিক হাকিম আদালত সেটি আমলে নেন। প্রসঙ্গত ২৬ অক্টোবর পেকুয়া সদর ইউনিয়নের বকসুচৌকিদারপাড়া থেকে গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধূর নাম হাজেরা বেগম (২০)। তিনি ওই এলাকার মো: খোকনের স্ত্রী। মামলার আর্জি সুত্রে জানায়, ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর হাজেরা বেগমের সাথে বকসুচৌকিদারপাড়া এলাকার আবদু রহিমের ছেলে খোকনের বিবাহ হয়েছে। দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর সংসার কিছুদিন সুখে ছিল। হাজেরার পিতা বাদশা মিয়া জানায়, পরকীয়া সম্পর্ক ও যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে প্রাণ দিতে হয়েছে। আমি মেয়ের হত্যার বিচার চায়। পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুল আজম জানায়, মামলার কপি এখনো হাতে আসেনি। মামলা করা হলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।